গণমাধ্যমে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে খুবিতে মানববন্ধন
করোনা মহামারির শুরু থেকে ফ্রন্টলাইনে থেকে কাজ করা গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন মিডিয়া হাউজ নানান অজুহাতে ছাঁটাই করছে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা। মিডিয়া হাউজের এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে অমানবিকতা উল্লেখ করে এ প্রতিবাদে আজ রবিবার বিকালে মানববন্ধনের আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ, সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশীদ, প্রভাষক শরীফুল ইসলাম ও প্রভাষক মাজেদুল ইসলাম। খুবি জার্নালিজম ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মতিউর রহমান, খুবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর হাসিব ও শিক্ষার্থী ইয়াছিন আহমেদ জীবু, ইমরান ইসলাম মামুন এবং মৌসুমি আফরোজ।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শরীফুল ইসলাম বলেন, মাথা ব্যাথার সমস্যা মাথা কেটে ফেলা হতে পারে না। গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাই না করে প্রকাশক ও মালিকপক্ষের উদ্দেশ্যে বলবো আপনারা বেতন কমিয়ে দিন, পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে দিন, ব্যয় সংকোচ করুন। প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে আলোচনায় বসুন। কিন্তু এই অমানবিকতা বন্ধ করুন।
প্রভাষক মাজেদুল ইসলাম বলেন, খুব কম গণমাধ্যমই ওয়েজ বোর্ড ফলো করে। ব্যতিক্রম বাদে বেশির ভাগ গণমাধ্যমই তাদের কর্মীদের খুব কম বেতন দিয়ে থাকে। এরমধ্যে যদি তাদের চাকরিচ্যুত করা হয় তাহলে তারা তাদের পরিবার নিয়ে কোথায় যাবে?
সহকারী অধ্যাপক মামুন অর রশীদ বলেন, মালিক-সম্পাকদের বলবো আপনার ব্যয় সংকোচন নীতি মেনে চলুন প্রয়োজনে একদিন পত্রিকা ছাপা বন্ধ রাখুন। কিন্তু গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাই বন্ধ করুন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পেশায় কখনই আসতে চাইবে না।
সহকারী অধ্যাপক ছোটন দেবনাথ বলেন, করোনা মহামারিকে অজুহাত হিসেবে ধরে মালিক-সম্পাদকরা আজ নেক্কারজনকভাবে কর্মী ছাটাই করছে। গণমাধ্যম একটি শিল্প একে বাঁচাতে তাদের উচিত মুনাফালোভী মানসিকতা থেকে সড়ে আসা।
খুবি জার্নালিজম ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। কিন্তু তাদের কাজের তেমন কোন মূল্যায়ন পায় না। এই পেশায় গণমাধ্যমকর্মীরা ভাই বলে সম্বোধন করলেও আজ বিপদের সময় ভাই তার ভাইকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
খুবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর হাসিব বলেন, গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাইয়ের এই অমানবিক কাজ দীর্ঘমেয়াদী গণমাধ্যম পেশাকেই হুমকির মুখে ফেলবে। কোন মেধাবী এই পেশায় আর আসতে চাইবে। তখন গণমাধ্যমও রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে কাজ না করে মালিকপক্ষের বিশেষ স্বার্থ হাসিলে কাজ করবে যা গণতন্ত্রের বিকাশকে বাধাগ্রস্থ করবে।
খুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা মনে করেন বাংলাদেশের সর্বোত্ত এই ঘৃণ্য কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিত। অমানবিকভাবে কর্মী ছাঁটাইয়ের ফলে রাষ্টের চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম চরম সংকটে পরছে।