বিনামূল্যে ইন্টারনেট দেয়া হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের
কভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে দীর্ঘ ছুটিতে রয়েছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে সংকটকালে ক্লাসের দরজা বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজট ঠেকাতে অনলাইনে ক্লাস চলছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অনলাইন ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আয়োজনে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশের সবগুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এতে যুক্ত হয়ে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে নিজেদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে মতামত তুলে ধরেন ।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, করোনাকালীন সেশনজট থেকে রক্ষা করতে ও শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এখন ক্লাস নেয়া হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেটের বিশেষ প্যাকেজ দেয়ার চেষ্টা করা হবে। এজন্য একবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আবারও মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
জানা গেছে, অনলাইন ক্লাস শুরুর জন্য কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরে বৈঠকে উপাচার্যরা বলেন, সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ নেই। ল্যাপটপের বিকল্প হিসেবে স্মার্টফোনেও ক্লাস নেয়া যায়। কিন্তু ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর তাও নেই। সারাদেশে সব স্থানে ইন্টারনেটের গতি কম। আবার সব স্থানে ইন্টারনেট সংযোগ থাকে না। অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দরও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। সব শিক্ষক ভার্চুয়াল ক্লাস নেয়ার ব্যাপারে অভ্যস্ত নন।
এসব সমস্যার প্রেক্ষিতে ভিসিদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করার জন্য প্রস্তাব করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয়, শিক্ষার্থীদের জন্য ‘স্পেশাল ইন্টারনেট প্যাকেজ’র জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখা হবে।
এছাড়া প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের আইসিটি সেল থেকে শিক্ষকদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবেন। শিক্ষকরা জুম বা গুগল ক্লাসরুম অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস নেবেন। এছাড়া ইউজিসির বিডিরেন প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিতে পারবেন।
ইউজিসির সদস্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা অনলাইন শ্রেণিপাঠ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেসব শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার নেই তাদের তালিকাভুক্ত করে সমাধান ও এ সুবিধার আওতায় আনা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই শতভাগ শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি।