মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে কুমিল্লার লাখো শিক্ষার্থী
- অপূর্ব মজুমদার, কুমিল্লা
- প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২০, ০১:০২ AM , আপডেট: ১৮ জুন ২০২০, ০২:২৫ PM
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মার্চের মাঝামাঝি থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা এখন ঘরবন্দী। করোনা-কালের এসময়ে সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন মেস কিংবা ভাড়া বাসায় থাকা শিক্ষার্থীরা।
এই বিড়ম্বনায় পিছিয়ে নেই কুমিল্লার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া লাখো শিক্ষার্থী। সম্প্রতি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ সংলগ্ন একটি ছাত্রীনিবাসে ৬ ছাত্রীকে আটকে রেখে ভাড়া আদায়ে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মালিকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় বইছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ তিন সরকারি কলেজ ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে সাধারণ ছুটি চলাকালে মেস ভাড়ার কিছু অংশ মওকুফের বিষয়ে করণীয় নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ।
সূত্র জানায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়হ তিন সরকারি কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে ৫০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরিপ্রার্থী রয়েছে আরও ৫০ হাজারের মতো। যাদের অধিকাংশ টিউশন-কোচিং করে মেস ভাড়াসহ সব খরচ নির্বাহ করে। টিউশন-কোচিং, প্রাইভেট স্কুল-কলেজে পড়িয়ে সংসার, চাকরির আবেদন ও ভাই-বোনের খরচ মেটান অনেকে।
কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ৬৬ দিন সাধারণ ছুটির ১০ দিন আগে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। ছুটি শেষ হলেও তিন মাস ধরে টিউশন-কোচিং করাতে পারছে না এসব শিক্ষার্থীরা। কমসংখ্যক ছাত্র আবাসিক হলে থাকলেও তাদের খাবার ও হাত খরচ মিটে টিউশনির টাকায়। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আর কবে স্কুল-কলেজে খুলবে তাও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না কেউ। এ অবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে উপার্জনহীন হয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে এসব শিক্ষার্থী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রুহুল আমিন ভূঁইয়া জানান, আমরা জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি ব্যবস্থা নিতে। আমাদের অনেক শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে মেস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। যেহেতু সবাই সমস্যার মধ্যে আছে, অনেক অভিভাবক কর্মহীন হয়ে পড়েছে, দরিদ্র পরিবারের অনেক ছেলে-মেয়েরাও পড়াশোনা করছে। আমি চাইব মেস ভাড়া ৪০ শতাংশ আদায় হোক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, অনেক মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের শিক্ষকরাও আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি যশোরের মতো শিক্ষার্থীদের ৬০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করতে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর জানান, এ ধরনের চিঠি পেয়েছি। তবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ছাত্রদের বিষয়ে করণীয় কি, তা আগে ঠিক করবে। এক্ষেত্রে কোনো মীমাংসা বা সমাধানে উনারা ব্যর্থ হলে আমরা তা দেখব।