শিক্ষার্থীদের বাড়িতে রেখে পরীক্ষা নিতে চান উপাচার্যরা
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল সেমিস্টারের পরীক্ষা ক্যাম্পাসে সশরীরে না এসে বাইরে থেকেই দেওয়া উচিত— এমনটাই মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে এমন প্রস্তাবই আলোচিত হয়েছে’।
আজ রবিবার (১৪ জুন) আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে প্রস্তাব যাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন।
পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘শিক্ষার্থীদের অনেকেই চাকরি পেয়ে গেছেন। তাই আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পরীক্ষার প্রক্রিয়া শেষ করতেই হবে’।
তবে ক্যাম্পাসে না এসে কীভাবে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেকেই বলছেন, বহু শিক্ষার্থীর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ বা কম্পিউটার নেই। সেক্ষেত্রে বাড়ি থেকে প্রথাগত প্রশ্নোত্তরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যাবে না।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিকল্প হিসাবে হোম অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্ট করানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রজেক্ট বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হবে বা পরীক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের বিভাগে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে জমা দিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কলা বিভাগ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, প্রেসিডেন্সির সব বিভাগেই চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষায় ক্যাম্পাসে না এসে মূল্যায়ন এবং আগের সিমেস্টারের ফলের ভিত্তিতে পাশ করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া, যাদবপুর ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাঁদের হোম অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে, প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ তাঁদের বাড়ি থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবেন।
লকডাউন শেষে রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার অন্তত এক মাস পরে চূড়ান্ত সেমিস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে এর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সকলের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে এ দিনের বৈঠকে সব উপাচার্য ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে চূড়ান্ত সেমিস্টার এবং চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা হওয়ার পক্ষে মত দেন।
জানা গেছে, চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষার্থীদের আগের সেমিস্টার থেকে ৫০% নম্বর, বাকিটা অন্তর্বর্তী মূল্যায়ন, হোম অ্যাসাইনমেন্ট অথবা প্রজেক্টের মাধ্যমে দেওয়া হতে পারে।