মৃত নাসিমকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার ব্যাঙ্গাত্মক স্ট্যাটাস, ক্ষেপছে ছাত্রলীগ
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২০, ০৭:১০ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২০, ০৮:০৪ PM
সদ্য প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে ব্যাঙ্গাত্মক স্ট্যাটাস দেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এক প্রভাষক। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ও সরকারি অঙ্গসংগঠনের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তা না হলে কঠোর আন্দোলন ও মামলার হুমকিও দিয়েছেন তারা।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার নাম সিরাজুম মনিরা। সম্প্রতি তিনি বিশ্ববদ্যিালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এর আগে ছাত্রজীবনে তিনি বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
জানা যায়, আজ শনিবার (১৩ জুন) লাইফ সাপোর্টে থাকা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর অন্যতম সদস্য মো. নাসিম মারা যান। তাঁর মৃত্যুকে নিয়েই ওই শিক্ষিকা তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে ব্যঙ্গ করে ‘যোগ্য নেতৃত্বে দেশ নাসিম্যা মুক্ত হল’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষয়টি ভাইরাল হলে গেলে পরে তা মুছে (ডিলিট) দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে ওই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষিকার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে বেরোবির বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, বিগত সময়েও আমরা দেখেছি বামধারার রাজনীতির মিছিলে উনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিলেন। জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সন্তান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী। আর তাছাড়াও একজন মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে এমন মন্তব্য কোনভাবেই কাম্য নয়। আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে এমন মনমানসিকতার একজন কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন? বিশ্ববিদ্যালয়ে কি আর কোন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল না?
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখ বলেন, করোনার পরিস্থিতি আর প্রিয় নেতার মৃত্যু সব মিলে সকলেই কঠিন মুহুর্ত পার করছে। এমন মুহুর্তে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হয়ে এমন স্টাটাস দেয়া খুবই দুঃখজনক। শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে আমরা এর প্রতিবাদ করব।
বেরোবি শাখা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, এমন ব্যঙ্গাত্মক কাজের জন্য তাকে শুধু শাস্তি নয় বিচারের আওতায় এনে অতিদ্রুত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানাচ্ছি। তার এই ধৃষ্টতার কারণে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার শাস্তির দাবি করছি। শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা করার সকল প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ার পূর্বে থেকেই ক্যাম্পাসে সরকার বিরোধী কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবুও তিনি কীভাবে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেন? এর দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এড়াতে পারেনা।
এ ব্যাপারে কথা বলতে অভিযুক্ত শিক্ষিকা সিরাজুম মুনিরাকে ফোন দিলে প্রথমে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে আবার দেয়া হলে তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।