রংপুরে সম্পূর্ণ ভাড়া চায় মেস মালিকরা, ঢুকতে দিচ্ছে না মেয়ে শিক্ষার্থীদেরও

করোনা ভাইরাসের কারণে চলমান ছুটিতে শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া পরিশোধ করার জন্য নোটিশ দিয়েছে রংপুর আশরতপুর চকবাজার মেস মালিক সমিতি। এসময় টাকা ছাড়া কোন শিক্ষার্থী মেসে প্রবেশও করতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

মেস মালিক সমিতি তাদের নোটিশে জানান, “করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার কর্তৃক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় করোনা ভাইরাস রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা এবং জনসমাগম এড়াতে লকডাউনের মাধ্যমে সকল সরকারী ও বেসরকারী অফিস আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন মেসগুলোর সকল ছাত্রছাত্রী গত মার্চ থেকে বাসায় অবস্থান করছে।”

“এমতাবস্থায় মেস মালিকদের তিন মাসের সীট ভাড়া অনাদায়ে ব্যাংক লোন, সিটি কর, হোল্ডিং ট্যাক্স, আয়কর, পানি ও বিদ্যুৎ বিল, জমির খাজনা এবং নাইট গার্ডদের বেতন প্রদানসহ চুক্তিভিত্তিক পরিচালিত মেস ব্যবসায়ীদের অন্য কোন উপার্জন ক্ষেত্র না থাকায় বর্তমান সময়ে অত্যন্ত আর্থিক সংকটে উপনীত হয়েছেন। বিষয়টি বিবেচনা করে রংপুর আশরতপুর মেস মালিক সমিতির কার্যপরিষদের আলোচনা সভায় সকলের সর্বসম্মতিক্রমে সমুদয় বকেয়া ভাড়া উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে মেসের বকেয়া ভাড়া পরিশোধ না করার কারণে টাকা ছাড়া মেসে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, কোন কোন মেস মালিক নিজে থেকেই পুরো অথবা কিছু টাকা ছাড় দিচ্ছে আর কোন কোন মেস মালিক শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করছে। বিশেষ করে মেয়েদের মেসে। এসব মেস মালিক এপ্রিল, মে, জুন মাসে ভাড়া পরিশোধ ব্যতিত কোন কারণেই মেসে ঢুকতে দিচ্ছে না। টাকা পরিশোধ ছাড়া মেসে বই আনতে গেলেও গেট পর্যন্ত খুলে দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সালামের মোড়স্থ জানিভা মেসের পরিচালিকা সাবানা বলেন, আমরা তো মেস মালিক বা অন্যের মেসে চাকরি করি। ভাড়ার বিষয়ে মেস মালিক সমিতি যা সিদ্ধান্ত নিবে সেটাই আমরা মানবো।

বিজ্ঞপ্তি

 

মেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, জেলা প্রশাসক আমাদেরকে ডেকেছিলেন কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। জেলা প্রশাসক বলেছেন, আমি আপনাদের (মেস মালিকদের) কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠাবো। সেখান থেকে যেটা সিদ্ধান্ত হয় সেটা আপনাদেরকে মানতে হবে। আমরা বলেছি, সারা বাংলাদেশ যেটা মানবে আমরাও সেটা মানবো।

তবে জিনিস নেওয়া বা প্রবেশের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ছোটখাটো জিনিস বা বইপত্র নেওয়ার ব্যাপারে কোন বাধা নাই। সেটা নিতে পারবে। তবে একেবারেই সবকিছু নিয়ে গেলে মালিকেরা কিভাবে টাকা তুলবে? মালিকদের বলে দেওয়া আছে এই সময়ে কেউ যেন টাকার চাপ না দেয়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও পরামর্শ দপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. নুর আলম সিদ্দিক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ভিসি স্যার নিজেও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মেস মালিকদের ভাড়ার টাকা মওকুফের বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন। আমিও সরাসরি এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা পরিস্থিতি অবজার্ভ করছি। শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই কথা বলতেছি আরো কথা বলবো। এ জন্য আমরাও বসে নেই তবে যত দ্রুত কিছু করা যায় শিক্ষার্থীদের জন্য করবো। এ বিষয়ে পরে জানাবো।

এ বিষয়ে কথা বলতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য এবং জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ