বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: সেশনজট নিরসনে যা ভাবছে প্রশাসন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) শিক্ষাকার্যক্রম। দীর্ঘ আড়াইমাস পর আজ বুধবার (৩ জুন) থেকে সীমিত পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু হয়েছে। তবে কবে থেকে ক্লাস-পরীক্ষা পুনরায় চালু হবে তা এখনো নিশ্চিত নন কর্তৃপক্ষ।
ক্লাসরুম সংকট, শিক্ষক সংকট, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে বেশকিছু বিভাগে ৬ মাস বা তারও অধিক সেশনজট রয়েছে। এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে তা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। সেশনজটের কথা মাথায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) পরামর্শ মেনে পরীক্ষামূলক অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম শুরু করলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী আর্থিক সংকট, দুর্বল ইন্টারনেট, স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ না থাকায় তাতে সমর্থন দেয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস পরবর্তী পরিস্থিতিতে সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভাবনা বা পরিকল্পনাই কী? এই বিষয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সাথে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর একাডেমিক কাউন্সিলের মাধ্যমে একাডেমিক ক্যালেন্ডার বিশ্লেষণ করা হবে। এতে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি যতদ্রুত সম্ভব পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে সেশনজট কমানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি অনলাইনে যে পরীক্ষামূলক ক্লাসের নির্দেশনা দেওয়া ছিল তা বলবৎ থাকবে। একইসঙ্গে ইউজিসির নীতিমালা কমিটির পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা পাওয়ার পর সেটা বিচার-বিশ্লেষণ করে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তীতে তখন চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নেয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন কারণ নেই। বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গভাবে খোলার পর একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করে পরীক্ষা বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সেশনজট কমিয়ে আনার ব্যাপারে যথাযথ চেষ্টা করা হবে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। এ মহামারি কবে শেষ হবে তা কেউ জানে না। এমন পরিস্থিতিতে দেশ বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করলেও আমরা তা পারছি না। ইউজিসির নির্দেশনায় আমরা পরীক্ষামূলক অনলাইন ক্লাসকার্যক্রম চালু করে দেখেছি, সেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত।
তিনি বলেন, করোনা সংকট কেটে গেলে আমরা দ্রুত ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার চেষ্টা করবো। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ক্লাসও নেওয়া যেতে পারে। আমাদের ক্লাস রুমের সংকট রয়েছে। সাধারণত একটি ক্লাস গ্যাপ হলে পরবর্তীতে ওই ক্লাস নেওয়ার মতো রুম পাওয়া যায় না। এজন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে ক্লাসরুম তৈরি করে হলেও ক্লাসগুলো নেয়া যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস যদি শীতকালীন ছুটির আগে চলে যায় তাহলে ওই ছুটি বাতিল করে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া যায় কিনা সেটাও আমাদের ভাবনায় রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষকেরা খুবই আন্তরিক রয়েছেন।