অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে মন্তব্য করায় শিক্ষার্থীর উপর চটলেন প্রক্টর
অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে মন্তব্য করায় এক শিক্ষার্থীর উপর চটেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ। জানা গেছে, দারিদ্রতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে প্রক্টরের স্ট্যাটাসে তার মন্তব্যের জের ধরে তিনি দফা দফায় ওই শিক্ষার্থীর উপর চটেছেন। এ বিষয়ে প্রক্টর পরেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মুহিবুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
মুহিবুল ইসলাম জানান, গতকাল ইবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাসের গুরুত্ব তুলে ধরে ‘জলে নামার আগে নেংটি খোলা’ শীর্ষক পোস্ট দেন। এতে মুহিব অনলাইন ক্লাসের সমস্যা তুলে ধরে ক্লাস না নেওয়ার পক্ষে কমেন্টে লিখেন,
‘মাননীয় প্রক্টর স্যার, আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপাস্থাপন করেছেন, স্যার আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নবিত্ত পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি। আপনি CYB-IU তে দেখেছেন অনেক ছাত্র-ছাত্রী তাদের পারিবারিক অস্বচ্ছতার জন্য সাহায্য চেয়েছে। এমন অনেক ছাত্র-ছাত্রী আছে যারা মুখ ফুটে বলতে পারে না। আর স্যার ইবির অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী গ্রামে থাকে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে সকলের অনলাইনে ক্লাসে উপস্থিত হওয়া সম্ভব নয়, তাই এটি তাদের জন্য বিলাসিতা। স্যার অনলাইন ক্লাস বন্ধে আপনি যদি সহায়তা করতেন।’
এতে প্রক্টর আপনাকে আলাদা ক্লাস নিয়ে বুঝাতে হবে লিখে রিপ্লাই দেয়। পরে মুহিবকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল দিয়ে বেয়াদপ ও তুই তুকারি করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পরে।
পরে মুহিব কমেন্ট ডিলিট করে প্রতিবাদ জানিয়ে ‘মাননীয় প্রক্টর মহোদয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হয়ে একজন ছাত্রকে তুই ও বেয়াদপ বলে সম্বোধন করা কতটুক মার্জিত জানিনা’ লিখে স্ট্যাটাস দেয়। স্ট্যাটাস সম্পর্কে অবগত হয়ে প্রক্টর ওই শিক্ষার্থীকে ফের মুঠোফোনে কল দিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়।
পরে পূনরায় প্রতিবাদ জানিয়ে ওই শিক্ষার্থী ফেসবুক স্টোরিতে লিখেন ‘বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তচেতনা ও গনতন্ত্রের চর্চা কেন্দ্র, মতামতের ভিন্নতা গণতান্ত্রিক অধিকার। মাননীয় প্রক্টর মহোদয় আপনার পদমর্যাদা অনুযায়ী কল দিয়ে একমত পোষণ করানো, জানিনা আপনার পদমর্যাদা অনুযায়ী কতটা কাম্য।’ পরে প্রক্টর আবার মুঠোফোনে কল দিয়ে মুহিবকে ধমক দিয়ে আবার বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
মুহিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদরা অনলাইন ক্লাসের বিপক্ষে। সেখানে অনলাইন ক্লাসের বিরুদ্ধে বলে আমি কি অন্যায় করেছি জানিনা। কারো মতের সাথে কারো মতের মিল না থাকতেই পারে। তাই বলে কল দিয়ে ঝাড়ি দিবে এটা সমীচিন নয়। এছাড়া তিনি অপমান ও হুমকির বিচারের দাবি জানান।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি নই। আমি ওই শিক্ষার্থীর পোস্টেও দুঃখ প্রকাশ করে কমেন্ট করেছি।’