সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই সেবা দিচ্ছেন বেরোবির নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা
- সৌম্য সরকার, বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ মে ২০২০, ০৫:০৫ PM , আপডেট: ০৩ মে ২০২০, ০৫:০৫ PM
বিশ্বব্যাপী করোনার সংকটকালীন সবাই যখন নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে বাসায় অবস্থান করছেন তখন কোন ধরণের সুবিধা ছাড়াই অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারীরা। অফিস আদেশে তাদের ছুটি নাই উল্লেখ থাকলেও কোন ধরণের নিরাপত্তা সরঞ্জাম প্রদান করা হয়নি বলে অভিযোগ একাধিক কর্মচারীর।
তারা জানান, কর্মচারীদের মধ্যে অনেকের বাড়ি গাইবান্ধা, পীরগঞ্জ এবং মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তারা নিজ বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করতেন। কিন্তু বর্তমান এই সময়ে সবকিছু লকডাউন থাকায় তাদের যাতায়াতে অনেক অসুবিধা। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের অন্যান্য মাধ্যম ব্যবহার করে ক্যাম্পাসে ডিউটি পালন করতে আসা লাগে। এতে আগের তুলনায় দ্বিগুণ-তিনগুণ পর্যন্ত বেশি ভাড়া ব্যায় হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে এসে তাদের নিরাপত্তার জন্য মাস্ক, হ্যান্ডওয়াশ, স্যানিটাইজার বা অন্যান্য কোন উপকরণ দেওয়া হয়নি। এমনকি থাকা খাওয়ারও কোন ব্যবস্থা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় শত কর্মচারী বিভিন্ন শিফটে নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের দায়িত্ব পালন করছেন। রমজান মাসে তাদের ইফতার এবং সেহরির সময় অনেক বেশি কষ্ট হয়। তাদের জন্য খাদ্য কিংবা হাত ধোয়ার জন্য নিরাপদ পানিরও কোন ব্যবস্থা নাই বলে জানান কয়েকজন কর্মচারী।
এদিকে তাদের ডিউটির পরিমাণ বেশি হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা। স্বাভাবিক অবস্থায় নীতিমালা অনুযায়ী ১২০ ঘন্টা অভার টাইম ডিউটি থাকলেও এখন তাদেরকে প্রায় তিনশ ঘন্টা ডিউটি পালন করতে হচ্ছে। যার কোন মূল্যায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিচ্ছে না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়াটাকে ভয়ের কারণ হিসেবে নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করার ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম জানান, লিখিতভাবে আমাদের জন্য কোন সুবিধা দেওয়া হয়নি। নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত যে ডিউটি করতে হচ্ছে সেটা করে আমাদের কি লাভ? হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ডওয়াশ কিংবা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা তো নেই উপরন্তু পানির জারেরও কোন ব্যবস্থা নাই যেখান থেকে কর্মচারীরা হাত পরিস্কার করবে।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কর্মচারীদের ক্যাম্পাসে থাকার এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবস্থা করুক। এতে অন্তত কর্মচারীদের জীবনের ঝুঁকি কমবে।’’
নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার সচিব (উপ-রেজিস্ট্রার) মো. আলী হাসান বলেন, নিরাপত্তাকর্মী এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের করোনা প্রটেক্ট করার জন্য কোন ব্যবস্থা প্রশাসন থেকে দেওয়া হয়নি। তবে সাবান হ্যান্ডওয়াশ দেওয়া আছে। তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশের পূর্বে তা ব্যবহার করবে। তবে কর্মচারীরা পিপিই বা মাস্ক, গ্লাভস বা অন্যান্য যা সরঞ্জাম চায় সেই ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি।
কর্মচারীদের অভারটাইমের বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্ত কি হবে এ বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু এরপূর্বে বাংলাদেশে এমন পরিস্থিতি হয়নি সেজন্য নীতিমালাও নেই। তাই নীতিমালার বাইরে অতিরিক্ত সময়টার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যা ব্যবস্থা নিবে সেটাই হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামালকে বার বার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।