২২ এপ্রিল ২০২০, ১৪:১৯

ক্যান্সার নিয়েও করোনাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিচ্ছেন যবিপ্রবির ভিসি

  © টিডিসি ফটো

একজন ক্যান্সারের রোগী হয়েও এসব কিছুকে তুচ্ছ মনে করে, সবকিছুকে দূরে ঠেলে প্রতিদিন নিজেই গাড়ি চালিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) করোনা পরীক্ষার গবেষণাগারে আসেন ৬২ বছর বয়সের যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন।

দেশে করোনা মহাসংকটপূর্ণ এ পরিস্থিতিতে নিজের জীবনকে বাজি রেখে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। পরিশ্রম করে নিজের চেষ্টারও সবটা দিয়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার যে করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষম প্রথমে তিনি যশোরের স্থানীয় সকল প্রশাসন, সিভিল সার্জন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি পাওয়ার পর তাঁর নেতৃত্বেই যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ, জেনেটিং ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগ এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকমন্ডলী এবং ল্যাব টেকনিশিয়ানদের নিয়ে করোনা পরীক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। এমন সময় নিজ গাড়ির ড্রাইভারকে ছুটি দিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে জিনোম সেন্টারে যাওয়া আসা করছেন।

তার নেতৃত্বেই করোনা পরীক্ষার প্রথম দিন ১৩টি ও দ্বিতীয় দিন ৪৭ টি নমুনা পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে যবিপ্রবি। তিনি জানেন, বয়স্ক এবং যারা ডায়াবেটিস, ক্যান্সারে আক্রান্ত তারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এত কিছু জানার পরও নিজের জীবন বাজি রেখে তিনি দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

বয়স্ক ও ক্যান্সার রোগীদের জন্য করোনা ভয়ংকর এমন প্রশ্নে উপাচার্য জানান, দেশের এই দুঃসময়ে আমাকে ঘরে রাখা সম্ভব না। আমার জন্য যদি দেশ তথা দেশের মানুষের উপকার হয় তার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতেও আমি রাজি। আমাদের শিক্ষকমন্ডলীরাও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তার জন্য তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের মতোই দেশের অনেক ডাক্তার, স্বাস্থকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তৎপরতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালেয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনিবুর রহমান ফেসবুকে লেখেন, দেশে যখন কোভিড-১৯ সন্দেহে মৃত ব্যক্তির পাশে যেতেই অনেকে সাহস পাচ্ছেন না, করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব চালাবার ভয়ে চাকরি ছাড়তে চাইছেন, তখন তিনি স্বতঃস্ফূভাবে এ কাজে এগিয়ে আসেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকেননি, নিজেই নিবিড়ভাবে সবকিছুর তত্ত্বাবধান করছেন। এর আগে তিনি এই স্বনামধন্য অণুজীববিজ্ঞানী ইতোমধ্যে গরুর খুরা রোগের জন্য FMDV (Foot and Mouth Disease Virus)-এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন।