‘যাদের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কথা তারাই লুটপাট করছে’
চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং করোনা সচেতনাতায় অনলাইন মুভমেন্ট করেছে ‘উত্তরণ লেখক ও পাঠকের সূতিকার’। শনিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রবিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সোহাগ সিকদার প্রেরিত এক বার্তায় কর্মসূচির কথা জানানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, পৃথিবী ব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশেও ছড়াচ্ছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, বিশ্বব্যাপী চলছে লাশের মিছিল!
আরো বলা হয়, পৃথিবীর কোথাও এখনো করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ওষুধ, টিকা বা চিকিৎসা পদ্ধতি আবিস্কার হয়নি। তবে চিকিৎসক, গবেষকরা করোনা প্রতিকারে নিরসলভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রযুক্তি, দক্ষতা ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী দেশগুলো যখন করোনা উৎকন্ঠায় বিধ্বস্ত তখন বাংলাদেশের সরকার করোনা মোকাবেলায় চরমভাবে উদাসীন এবং দেখা যাচ্ছে করোনা দুর্যোগের সময়ও এক শ্রেণীর লুণ্ঠনকারী দাম বৃদ্ধি করে তাদের পকেট ভারি করতে ব্যস্ত।
তারা বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে যেখানে মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কথা সেখানে তাদের অনেকেই অসহায় মানুষদের ত্রাণের চাল চুরি করছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত চলছে ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনসহ নানান অপরাধের ঘটনা। এই দুর্যোগকালীন অবস্থায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে সরকার এবং বিজিএমইএ এর অমানবিক ও নিষ্ঠুরতম আচরণ আমরা প্রত্যক্ষ করছি।
সামগ্রিকভাবে মহামারীর পরিস্থিতিতে সরকারের চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা, দায়িত্বহীনতা ও ব্যর্থতা প্রকাশিত হচ্ছে উল্লেখ করে তারা বলেন, একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনাও ঘটছে। তাই এই সামগ্রিক অনিয়ম, ধর্ষণ, হত্যার প্রতিবাদ ও করোনা সচেতনাতায়।
এসময় অংশগ্রহণকারীরা নিজ নিজ ঘর থেকে প্লাকার্ড বা কাগজে লেখা দাবি অনলাইনে প্রদর্শনের মাধ্যমে অনলাইনে প্রতিবাদ জানায়। এছাড়াও নানা শ্রেণী পেশার মানুষ সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহন করেন।
সংগঠনটির পক্ষ বলা হয় করোনা প্রতিরোধে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে। সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনগনকে সচেতন হওয়ার আহবান জানায়। প্রদর্শিত প্লেকার্ডে দাবি ও জনগণের কাছে আহবানসমূহ হচ্ছে-
১. সকলেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন ও যথা সম্ভব নিজ গৃহে অবস্থান করবেন
২. গণজমায়েত পরিত্যাগ করুন
৩. আশেপাশের দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে আর্থিক ও মানবিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন
সরকারের কাছে তাদের দাবি-
১. শ্রমজীবী মানুষের খাবারের নিশ্চয়তা প্রদান করে আনুষ্ঠানিকভাবে লকডাউন ঘোষণা করতে হবে
২.গার্মন্টস শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকদের সবেতন ছুটি ও চাকরি না হারানোর নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে
৩. ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করতে হবে
৪. করোনা রোগী ও সম্ভাব্য আক্রান্তদের জন্য শতভাগ টেস্ট ও প্রয়োজনীয় কিটস নিশ্চিত করতে হবে
৫. সারাদেশে অস্থায়ী করোনা হাসপাতাল করতে হবে
৬.ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রদানকৃত ত্রাণ ও চাল চোরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং
৭. চলমান ধর্ষণ ও হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।