সাত কলেজ: এমন নীরব ক্যাম্পাস কেউ কখনোই দেখেনি
- আল-আমিন মাসুদ
- প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২০, ০৫:৫১ PM , আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০, ০৬:৩৯ PM
চেনা ক্যাম্পাস আর হলগুলো আজ বড্ড অপরিচিত। নেই ক্লাসে দেরি হওয়ার তাড়া কিংবা লাইব্রেরীর সিট দখল। নেই হৈচৈ কিংবা কোলাহল। পরিচিত চত্তরগুলো শিক্ষার্থীর শূন্যতায় যেনো যৌবন হারিয়েছে। পুরো ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে বইছে সুনসান নীরবতা। এমন নীরব ক্যাম্পাস ও হল আগে কেউ কখনোই দেখেনি।
বিশ্বব্যাপী মহামারীতে রূপ নেয়া করোনার প্রকোপ পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজ ও হলগুলোতে। পূর্ব প্রস্তুতি ও শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় ইতোমধ্যে বন্ধ হয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭ মার্চ থেকেই বন্ধ ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের সকল ক্যাম্পাস। সেই সঙ্গে শুক্রবার থেকে বন্ধ আছে কলেজগুলোর আবাসিক ছাত্রাবাসগুলো।
এর আগে সরকারি নির্দেশনা আসার সাথে সাথেই স্ব স্ব কলেজের অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে বন্ধের বিজ্ঞপ্তি আসে। এছাড়াও ঢাবির ন্যায় অধিভুক্ত সাত কলেজের সকল পরীক্ষা স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও কিছু ক্যাম্পাসের হলগুলো খোলা রাখা হয়েছিলো। তবে ১৯ মার্চ ঢাবির সিন্ডিকেট সভায় হল বন্ধে নোটিশ দেয়ার পর পরই অধিভুক্ত কলেজগুলোর হল গুলোও বন্ধ ঘোষনা করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদ কিংবা পূজার ছুটিতেও এর আগে এমন মানবশূণ্য হয়নি কোনো প্রতিষ্ঠানের হল। ছুটিতেও কিছু শিক্ষার্থী থেকে যেতো। কিছুটা আনাগোনা থাকতো শিক্ষার্থীদের। কিন্তু এইবার করোনাভাইরাসের কারণে আতংক ও সচেতনতায় সবাই হল ছেড়েছে।
তিতুমীর কলেজের ছেলেদের জন্য আক্কাসুর রহমান আঁখি হল। আর মেয়েদের জন্য বেগম সুফিয়া কামাল ছাত্রীনিবাস ও সিরাজউদ্দীন ছাত্রীনিবাস। এর সবকটি হলের মূল ফটকে ঝুলছে তালা। নেই কোনো নিরাপত্তাকর্মীও। অবৈধ ভাবে হলে কেও অবস্থান করছে কিনা তা দেখার জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে হলগুলোয়। প্রায় একই অবস্থা অন্যান্য কলেজের হলগুলোর।
ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র মাহমুদুল হাসান বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হল ছেড়েছি। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় কত সমস্যা হতো কিন্তু এভাবে হল খালি হতো না। করোনাভাইরাসের কারণে চিরচেনা ক্যাম্পাস তার রূপ হারিয়েছে। জানি না কতদিন পর ক্যাম্পাস তার আগের অবস্থা ফিরে পাবে।
তিতুমীর কলেজের আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নয়ন আহমেদ বলেন, হলে থাকা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ অনেকে একসঙ্গে থাকার ফলে সহজে একজন থেকে আরেক জন আক্রান্ত হতে পারে। তাই কৃর্তপক্ষের এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী।
সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো: আশরাফ হোসেন বলেন, যেহেতু তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক। যার ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রামনের আশঙ্কা বেশি। তাই শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কলেজ প্রশাসন ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া, কলেজের হল গুলো বন্ধ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সব কলেজেই করোনা সচেতনতায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।