বহিষ্কৃত কর্মীকে হলে তুলছেন জাবি ছাত্রলীগ নেতা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত এবং হল থেকে বিতাড়িত এক ছাত্রলীগকর্মীকে পুনরায় হলে উঠানোর পায়তারার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।
ওই (যিনি হলে আছেন) ছাত্রলীগ নেতার নাম পংকজ দাশ। তিনি দর্শন বিভাগের ৪১ তম আবর্তনের ছাত্র এবং শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অভিযোগ উঠেছে, শাখা ছাত্রলীগের এই নেতা বেশ কিছুদিন ধরে হলে নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য আসিফকে পুনরায় হলে আশ্রয়ের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার তাকে হলের ২০৯ নং রুমে আসনের ব্যবস্থা করে দেয়।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগকর্মী হলেন আসিফ ইকবাল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ তম ব্যাচের ছাত্র ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, আট মাস আগে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে হল থেকে বিতাড়িত করা হয়। একই সময়ে শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নিকট তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারেরও সুপারিশ পাঠানো হয়।
বহিষ্কৃত ছাত্রলীগকর্মীকে হলে উঠানোর চেষ্টায় আতঙ্ক বিরাজ করছে অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা মধ্যে। তারা বিশৃঙ্খলা আশংকা করছেন।
একাডেমিক কার্যক্রমেও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ রয়েছে হল থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের এ কর্মীর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে সে ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হলেও বার বার অকৃতকার্য হয়ে ক্লাস করছেন ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সাথে। তাতেও বার বার ফেল করায় বিশেষ পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পংকজ দাশ বলেন, ‘সে (আসিফ) রিহ্যাবে ছিল ৬ মাস। যার কারণে সে নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছে। তাই আমি মনে করি তাকে একটু সুযোগ দেয়া দরকার। তারপরও আমরা আরেকটু ভেবে দেখি, কি করা যায়।’
ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা বলেন, ‘কয়েক মাস আগে এক ব্যক্তি থেকে মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসে আসিফের বিরুদ্ধে। এর পূর্বেও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকায় এবং অনেক কিছু প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বরাবর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সুপারিশনামা পাঠিয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমি বিষয়টা নিয়ে অবগত আছি। বিভিন্ন অভিযোগে বিতাড়িত এরকম একজন ছাত্রকে হলে পুনরায় অবস্থানের মাধ্যমে হলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দিব না। বিষয়টা আমরা যাচাই করে অতি দ্রুত একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’