শিক্ষিকাকে ধর্ষণের চেষ্টায় অফিস সহকারী বরখাস্ত
স্কুল চলাকালীন সময়ে নিজ স্কুলের ভেতরেই শিক্ষিকাকে ধর্ষনের চেষ্টায় অফিস সহকারী হারেজ উদ্দীনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় মানিক দ্বিপা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
এ ঘটনায় উপজেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেছেন অন্যান্য স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকসহ এলাকার সাধারণ জনগন।
বুধবার সকালে ওই অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত ওই শিক্ষিকা। পরে সকালে সরেজমিনে ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্ত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তৌফিক আজিজ। ঘটনার গভীর তদন্ত করতে ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে। হারেজ উদ্দীন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বেলা সারে ১১টার দিকে স্কুল ভবন সংলগ্ন একটি মাটির পয়েন্টে ভ্রাম্যমান আদালতে এসেছিলেন শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা পারভীন। প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক সে সময় ওখানে গিয়েছিলেন। অন্য শিক্ষকরা ক্লাশ নিচ্ছিলেন। ঘটনার শিকার ওই সহকারী শিক্ষিকা শিক্ষক বিশ্রামাগারে একাই ছিলেন। এই সুযোগে অফিস সহকারী হারেজ উদ্দীন ওই শিক্ষিকাকে জাপটে ধরে জোর জবরদস্তি করে ধর্ষনের চেষ্টা করেন। এসময় নিজেকে বাঁচাতে ওই শিক্ষিকা অফিস সহকারী হারেজ উদ্দিনের গালে চড় মারেন এবং চেয়ার তুলে মারতে চেষ্টা করেন। হারেজ উদ্দীন সেই চেয়ার ধরে ফেলেন এবং আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তার উপরে শক্তি প্রয়োগ করেন। তিনি নিজেকে কোন রকমে বাঁচিয়ে রুম থেকে বাহির হয়ে আসেন এবং প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকদের ঘটনা জানান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সকল শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটি তাৎক্ষনিক ভাবে বৈঠক করেন এবং ওই শিক্ষিকাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। গতকাল বুধবার সকালে ওই শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এবং স্কুলের সকল শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অফিস সহকারী হারেজ উদ্দীনকে সাময়িক বহিষ্কার করেন এবং ৩ সদস্য বিশিস্ট তদন্ত কমিটি করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার তৌফিক আজিজ জানান, ঘটনা শুনে প্রাথমিক তদন্ত করতে সরেজমিনে তিনি ওই স্কুলে গিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। গভীর তদন্তের জন্য ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে তিনি ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জেনেছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইনছান আলী জানান, সহকারী শিক্ষিকা অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। অফিস সহকারী হারেজ উদ্দীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গভীর তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তাদের দেয়া প্রতিবেদনের উপরে পরবর্তি আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
শাজাহানপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল হাকিম জানান, বিষয়টি দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ঘটনা তদন্ত করা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে হারেজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।