০৫ মার্চ ২০২০, ১৮:৩৪

ভিসির পক্ষে-বিপক্ষে দাঁড়ালেন বেরোবি শিক্ষকরা

শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে উপাচার্যের পক্ষে-বিপক্ষে শিক্ষকদের মানববন্ধন  © টিডিসি ফটো

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর পক্ষে বিপক্ষে মানববন্ধন করেছে শিক্ষকদের দুইটি ভিন্ন গ্রুপ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ভিসিকে ‘দূর্নীতিগ্রস্ত ও স্বেচ্ছাচারী’ উল্লেখ করে উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের টাঙ্গানো ‘ভিসির হাজিরা খাতা চুরি, স্মারকলিপি-ব্যানার’ অপসারণের প্রতিবাদে এবং ক্যাম্পাসে ভিসির উপস্থিতি ও সাক্ষাতের দাবিতে মানববন্ধন করেন।

এদিকে তাদের কর্মসূচি শেষে একই স্থানে ভিসির পক্ষে বিভিন্ন সাফায় গেয়ে সুরক্ষার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার প্রতিবাদে পাল্টা মানববন্ধন করেন ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদ’।

উপাচার্য বিরোধী শিক্ষকদের পক্ষে মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, কি করে একজন ভিসি ৯০ শতাংশ ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থেকে নির্লজ্জভাবে নামকাওয়াস্তে ৫০টি কোর্স পড়ানোর দায়িত্ব নেন। ভিসি যে দুর্নীতি করেছেন তার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার চাকুরিচ্যুত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার জন্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, নীল দলের সভাপতি ড. নিতাই কুমার ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক আসাদ মন্ডল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দীন, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমশেল চন্দ্র রায়, বেরোবি শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আনোয়ারুরুল আজিম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাসনীম হুমাইদা প্রমুখ।

অন্যদিকে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের মানববন্ধনে নব প্রজন্ম শিক্ষক পরিষদের পক্ষে আহ্বায়ক সুমাইয়া তাহসিন হামিদা অভিযোগ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলনের কারণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস। এ আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে এমনও ব্যক্তি আছেন যিনি দুর্নীতির দায়ে জেল খাটা পূর্ববর্তী উপাচার্যের আপন ভায়রা। যার ক্যাটালিং এর ব্যবসা আছে। এই কারণে দীর্ঘদিন ক্যাফেটেরিয়া চালু করেননি। যখন নানাবিধ জটিলতা কাটিয়ে বর্তমান প্রশাসন ক্যাফেটেরিয়া চালু করলো তখন তিনি পদত্যাগ করলেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বৃহৎ স্বার্থ চিন্তা করেননা।

তিনি বলেন, পদার্থ বিজ্ঞান ব্যাকগ্রাউন্ডের এক শিক্ষকের নিয়োগের শর্ত ছিলো তিনি আপাতত সিএসই বিভাগে যোগদান করবেন পরে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ খোলা হলে তিনি চলে যাবেন কিন্তু তা না করে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এটি মেনে নেয়ার মতো না। আর একজন শিক্ষক যিনি পিএইডি করার জন্য পূর্ণকালীন ছুটি নিলেও গবেষণার কোনো কাজ না করে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এ জন্য আমরা উপাচার্যের মাধ্যমে ইউজিসিতে বিষয়টি অবগত করতে চাই।

সার্বিক বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক একটি দেশ। এখানে প্রত্যেকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। একটি গ্লাসে অর্ধেক পানি রাখলে কেউ খালির কথা বলবে আবার কেউ অর্ধেক ভর্তি একথা বলবে। এটা তার দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, যারা আজকে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে তাদের অধিকাংশই আমি ক্যাম্পাসে আসার আগে এবং পরে আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্নভাবে আশ্বাস দেন। এখন তাদের ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেছে তাই তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন। তারা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিস্বার্থের কারণেই ক্যাম্পাসকে এভাবে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।