সমাবর্তনের দাবিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১২:১৭ PM , আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৪৫ PM
সমাবর্তনের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। শনিবার দুপুরে শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় তারা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘কালো গাউন পরার ইচ্ছে আমাদেরও হয়’, ‘আমাদেরও ইচ্ছে হয় টুপি-গাউন জড়িয়ে ছবি তুলতে’, ‘গাউন গাঁয়ে জড়িয়ে মুখে এক চিলতে হাসি রেখে সেলফি তুলতে’-প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রতিবছরে সমাবর্তন আয়োজন করতে হবে; কলেজগুলোতে সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত আদায় করা যাবেনা; সকল বিভাগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক ব্যবহারিক কোর্স চালু এবং গবেষণাগার চালু; মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে শিক্ষক ও ক্লাসরুম সংকট দুর করতে হবে এবং কলেজগুলোকে শুধু সনদপ্রাপ্তির কেন্দ্র না করে সংস্কারের মাধ্যমে কর্মমুখী শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সমাবর্তন অনুষ্ঠান একজন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা পরবর্তী সবচেয়ে বড় উপহার। বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপিঠ। এখানে পড়াশোনা করে ২৮ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ২৮ বছর পরেও সফলতার সাথে কোন সমাবর্তন আয়োজন করেনি। ২০১৭ সালে ঢাকায় একটি সমাবর্তনের আয়োজন করলেও তা ছিল ত্রুটিপূর্ণ ছিল।
মানবন্ধনে সিদ্ধেশ্বরী কলেজের ছাত্র ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের পরীক্ষার খাতা ভালভাবে মূল্যায়ন করা হয়না। সবাই মনে করে আমরা পিছিয়ে আছি। আমাদের পর্যাপ্ত ক্লাস হয়না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন খুবই দরকার। আমরা আমাদের ভিসি হারুনুর রশীদ স্যারকে এই দাবি জানাচ্ছি।
ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অব আইটি শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন বলেন, আমাদের দাবি ন্যায্য আর সময়োপযোগী। আমরা ২৮ বছরে শুধুমাত্র একবার সমাবর্তন পেয়েছি। আমরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলাম প্রতিবছর সমাবর্তন পেয়ে যাব। কিন্তু পাইনি। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি আমরা যাতে আর অবহেলিত না হই। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমাদের এই দাবি জানাচ্ছি।
তেঁজগাও কলেজের ছাত্রী ইফরা জাহান বলেন, সমাবর্তন আমাদের ন্যায্য অধিকার। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ লক্ষ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করি। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও আমরা যথাযথ সম্মান পাইনি। আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলা করি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শুনলে নাক কুচকায় মানুষ। আজকে জব সেক্টরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচুর শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়ে সমাবর্তনের দাবি আদায় করব।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক মোঃ রহমাতুল্লাহ বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর বাংলায় অন্যায়ের ঠাঁই নাই। আমাদের একটাই আশা, একটাই চাওয়া আমাদের উৎসবমুখর বিদায় চাই।
আজিজ আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শিক্ষার্থী আরিফ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বড় বড় নেতৃত্ব আসে সে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবজ্ঞা করে কখনো একটা দেশ চলতে পারেনা। যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতি হয় দেশের, সে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবজ্ঞা করা যাবেনা।