বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারের দাবিতে খুবিতে বিক্ষোভ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (০১ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে সমবেত হয়। পরে দুপুর ১২ টায় তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েকবছরে বেতন ফি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন টার্ম রেজিস্ট্রেশনের পুর্বেই বেতন-ফি সহনীয় মাত্রায় কমাতে হবে। এসময় রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনা না হলে তারা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ১৯৯০’র ৫ম খন্ড দাগ নাম্বার ৪৫, পৃষ্ঠা ৬৬১৫ এ উল্লেখ আছে- প্রত্যেক ছাত্র সংবিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্বারা নির্ধারিত স্থান ও শর্তাধীনে বসবাস করবে। অথচ মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩১.৫৯ শতাংশ আবাসনের সুযোগ পায়। আবাসন সংকট নিরসনে কত দিনের মধ্যে নতুন হল হবে তা লিখিত আকারে আমাদের জানাতে হবে। পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হোস্টেলে ব্যবস্থা করতে হবে।
তাদের পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো: আবাসন সঙ্কট দূরকরণ, বেতন ফিসের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বেতন কমানো, দ্বিতীয় পরীক্ষণের ব্যবস্থা ও কোডিং পদ্ধতির ব্যবস্থাকরণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী অধ্যাদেশের সংস্কার তথা সাংস্কৃতিক অবরুদ্ধতা থেকে মুক্তি ও মুক্তচিন্তা বিকাশে অধ্যাদেশের ব্যবস্থাকরণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত যেসব দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে তার প্রতিকার করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের দাবিগুলো না মেনে নেওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর উল্লিখিত সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর ২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় তারা এ কর্মসূচীর ডাক দেয়।
সর্বশেষ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য শিক্ষকবৃন্দের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহবায়ক হলেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব হলেন ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন। কমিটিকে জরুরী ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।