২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:৩৭

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সফলতার তালিকায় ‘সাত কলেজ সঙ্কট’

  © টিডিসি ফটো

বছর শেষ হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সফলতা ও ব্যর্থতার পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় তাদের সফলতার তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকাশিত তালিকায় ৫১টি সফলতার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ সঙ্কট সমাধানকেও তুলে ধরা হয়েছে।

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ৫১টি অর্জন তুলে ধরেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই তালিকায় সাত কলেজ সঙ্কট সমাধানকে ২৮ নম্বর স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের বিরাজমান সমস্যা সমূহের সমাধান করা হয়েছে।’’

এছাড়া তালিকায় নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি, শিক্ষার মান উন্নয়ন, প্রশ্নফাঁস ও গুজব প্রতিরোধ করা, পাবলিক ও বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। 

বছরজুড়ে বিভন্ন সময় বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে করতে দেখা গেছে অধিভুক্ত এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের। কোন সময় রেজাল্ট জটিলতা, আবার কোন সময় খাতার মূল্যালন কিংবা গণহারে ফেল করার মত বিষয়গুলো নিয়েও আন্দোলন করেছে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা। তবে কর্তৃপক্ষ বরাবরই অধিভুক্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছেন। তাদের দাবি, সাময়িক সমস্যা থাকলেও ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদি কোন সমস্যা থাকবে না। 

অন্যদিকে এসব কলেজগুলোর অধিভুক্তি বাতিলের জন্য আন্দোলন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ। তাদের দাবি ছিল, সাত কলেজের অধিভুক্ত করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা সাত কলেজে গুরুত্ব দিতে গিয়ে নিজেদের শিক্ষার্থীদের সঠিক সময় দিতে ব্যার্থ হচ্ছেন। এছাড়া বেশকিছু সুনির্দিষ্ট দাবি জানিয়ে মাসজুড়ে অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

তবে সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস। তিতুমীর কলেজের ১৫-১৬ ব্যাচের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম আরিয়ান জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কি করেছে তার থেকে বড় কথা হচ্ছে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ পর্যন্ত কতটুকু সমাধান পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, আমরা যেটা দেখছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে যে ব্যাচগুলো এসেছে তাদের সমস্যাটা মোটামুটি হচ্ছে না। আমরা কিংবা আমাদের সমসাময়িক কয়েকটি ব্যাচ অধিভুক্তি সমস্যা নিয়ে সবচেয়ে বেশী ভুক্তভোগী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নির্যাতন থেকে এসে আমরা এখন ঢাবির নির্যাতনে আছি।

অধিভুক্ত এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে রাজপথে নেতৃত্বে থাকা ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী বিএম শাহিন জানিয়েছেন, সঙ্কট সমাধান হয়েছে কথাটা বললে ভুল হবে। মন্ত্রণালয় তাদের নিজেদের কথা বলতেই পারে। আমরা শিক্ষার্থী হিসেবে বলবো, আমরা এখনো শতভাগ সন্তুষ্ট হতে পারছি না। রেজাল্ট, খাতার মূল্যায়ন এবং একাডেমিক ক্লাসগুলোতে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া আরো যেসব বিষয়গুলো নিয়ে সঙ্কট রয়েছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এগুলোর সমাধান করতে হবে।

সাত কলেজের সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর এ কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়াতে শিক্ষার্থীদের উপকার হয়েছে। প্রাথমিক দিকে যে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসেছে তাদের নিয়ে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। তবে তাদের গ্র্যাজুয়েশন শেষ হলে সমস্যা কেটে যাবে। আর অধিভুক্তদের মধ্যে এখন যারা নিয়মিত আছে তাদের কোন সমস্যা হবে না।