শিক্ষকের বোন প্রথম: ভর্তি কার্যক্রম বন্ধে ৫০ শিক্ষকের আবেদন
- সৌম্য সরকার, বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৪৫ PM , আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৫:৪৭ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের (স্নাতক) ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় শিফটে প্রথম হওয়া মিশকাতুল জান্নাতের ভর্তি হওয়া নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে চলছে সমালোচনার ঝড়। এ নিয়ে নানান প্রশ্ন তুলে সকল ধরনের ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে প্রায় ৫০ শিক্ষকের স্বাক্ষরসহ রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোন কিছু জানেন না বলে নিজেকে নিদোর্ষ দাবি করছেন ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক সহকারী অধ্যাপক সোহেলা মুসতারী।
মিশকাতুল জান্নাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর আপন ছোট বোন। শিক্ষকের ছোটবোন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন একইসঙ্গে ওই শিক্ষক ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রমে সরাসরি কিভাবে জড়িত থাকতে পারেন সে ব্যপারে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ভর্তি পরীক্ষায় জ্যৈষ্ঠ শিক্ষকদের বাদ দিয়ে একেবারে নতুন এবং জুনিয়র শিক্ষকদের ইউনিট সমন্বয়ক বানানো হয়েছে। প্রশ্নপত্র মডারেশন এমনকি ভর্তি পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া লাগে সে বিষয়েও ওই শিক্ষক জানেন না বলেও অভিযোগ করছেন অনুষদের অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিশকাতুল জান্নাত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘এফ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ১৯ নভেম্বর সকল ইউনিটের ফল প্রকাশ করলে এতে ‘বি’ ইউনিটের (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) মানবিক থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তার নম্বরের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে মিশকাতুল জান্নাত এমসিকিউয়ে ৮০ এর মধ্যে ৬৭.২৫০ পেয়েছেন। যা অন্য কোন ইউনিটে আর কেউ পায়নি। তার ‘বি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার রোল ২৪০২৭৮। অথচ ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় শিফটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-১৪১৭৫২) অকৃতকার্য হন মিশকাতুল জান্নাত। একইভাবে ‘এফ’ ইউনিটেও চতুর্থ শিফটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে (রোল-৬৪১৭৫১) অকৃতকার্য হন এই ভর্তিচ্ছু।
এ বিষয়ে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক ইমরানা বারীর সাথে গত তিনদিনে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে এমনকি তার অফিস কক্ষেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ‘বি’ ইউনিটের সমন্বয়ক সহকারী অধ্যাপক সোহেলা মুসতারীর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গেলে তিনি নির্দোষ এবং কে কি করেছে তা তিনি জানেন না বলে কথা না বলেই স্থান ত্যাগ করেন।
এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘দুটি ইউনিটে ফেল এবং একটি ইউনিটে অস্বাভাবিক পরিমান নাম্বার পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়ে আমরা গণমাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আসলে বিব্রতবোধ করছি। বিষয়টা যেহেতু ইউনিটের সেহেতু বিষয়টা ইউনিট সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খতিয়ে দেখবেন বলে আশা করি।’
কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার সদস্য সচীব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘শিক্ষকদের অভিযোগপত্র পেয়েছি। উপাচার্য দেশের বাইরে আছেন। তাকে বিষয়টি জানানো হবে। তিনি কি সিদ্ধান্ত নিবেন সে ব্যাপারে তিনি ভালো জানেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।