উদ্বোধনের ৪ বছর পর কার্যক্রম শুরু শেখ হাসিনা হলের
২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুটি আবাসিক হলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হল দুটি হলো- জননেত্রী শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল। এর মধ্যে অনেক অপেক্ষা আন্দোলন, কর্মসূচির পর অবশেষে ছাত্রীদের আবাসিক হল জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের আবাসিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) চবির জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের আবাসিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। ছাত্রীদের জন্য নির্মিত হলটি ৯৮ হাজার ৫০০ বর্গফুটের এবং চার তলা বিশিষ্ট। এতে রয়েছে ৫০০ আসন। হলটিতে একটি লিফট, দুই হাজার বর্গফুটের পাঠাগার, কমন রুম, ইনডোর গেমসের সুবিধা, ছাত্রীদের জন্য রান্নাঘর ও প্রার্থনা কক্ষ রয়েছে।
পড়ুন: ‘স্যার আমি ফাইন, আপনার রুমে এক ছোট ভাই পরীক্ষা দিচ্ছে’
শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনকালে বক্তব্য রাখেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং চবির কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।
উপাচার্য তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, বহু প্রতীক্ষিত চবির জননেত্রী শেখ হাসিনা হলের আবাসিক কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক আজ উদ্বোধন হলো। এই হলের আবাসিক কার্যক্রম উদ্বোধনের ফলে আমাদের ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা কিছুটা হলেও নিরসন হবে।
পড়ুন: ‘দেশ সৃষ্টি যাদের কারণে আজ তারাই কথা বলতে পারছেন না’ (ভিডিও)
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আনোয়ারুল আজিম আরিফ দুটি হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আবাসন সংকট নিরসনে ছাত্রীদের জন্য ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ২ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০০ আসনের চারতলা ভবনের জননেত্রী শেখ হাসিনা হল ও ছাত্রদের জন্য ৯ কোটি ৭৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৮৬ আসনের দোতলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর। এরপর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলগুলো উদ্বোধন করেন।
উদ্ধোধনের পর ৪ বছর লেগেছে আবাসিক কার্যক্রম শুরু করতে। তাও শুধুমাত্র ছাত্রীদের জন্য নির্মিত আবাসিক হল জননেত্রী শেখ হাসিনা হলটি চালু হয়েছে।
পড়ুন: একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত
চলতি বছরের ৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সমন্বিত নবীন বরণ অনুষ্ঠান চলাকালে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে এসে স্লোগান দিতে থাকেন। অনুষ্ঠানের মঞ্চে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী দ্রুত সময়ের আসন বরাদ্দের ঘোষণা দেন।
কিন্তু এরপরও দুই দফা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আবাসিক হলের সঙ্গে এই হলটির সাক্ষাৎকারের তারিখ পেছানো হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার দায়িত্ব গ্রহণের পর সকল আবাসিক হলের প্রভোস্ট, অনুষদের ডিনদের নিয়ে এক সভায় আসন বরাদ্দের সাক্ষাৎকারের তারিখ পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে গত ২ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর প্রণব মিত্র চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনিবার্য কারণে সাক্ষাৎকার স্থগিতের বিষয়টি জানিয়েছেন।
পড়ুন: ওসি এসেই পানিতে ঝাঁপ দেন, উদ্ধার করেন ১৫ জন
সর্বশেষ হলের সিট বণ্টন সাক্ষাৎকারের ফলাফল ঘোষণা না করায় গত ১৩ই অক্টোবর ছাত্রীরা আন্দোলন করেন। এদিন তারা শেখ হাসিনা হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দুইটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে এবং ২০ অক্টোবরের মধ্যে যোগ্যদের নোটিশ দিতে হবে। এর আগে গত ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। প্রশাসনের দাবি ফল প্রকাশের জন্য এক মাসের সময় দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা বলেন দশ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। সে সময় কতৃপক্ষ জানিয়েছিলেন ভর্তি সংক্রান্ত ব্যস্ততার কথা। তবে ১২ নভেম্বরের মধ্যে ছাত্রীদের জন্য হলটি খুলে দেয়ার কথা বলা হয়। অবশেষে ১২ই নভেম্বর হলটির আবাসিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।
আরো পড়ুন:
টেলিভিশন দেখতে পারেন না আবরারের মা