আইসিপিসি প্রতিযোগিতা: আর্থিক সংকটে অংশ নিতে পারছে না বেরোবি
আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক প্রাথমিক প্রতিযোগিতায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি দল ১৯তম স্থান অর্জন করেছে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে রিজিওনাল কন্টেস্টে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট (আইসিপিসি) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে সারা দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে প্রতিবছর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এবারেও সেই আয়োজন করেছে আইসিপিসি ফাউন্ডেশন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সিএসই বিভাগ থেকে এবারে তিনটি দলকে বাছাই করা হয়েছে সেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য।
কিন্তু অংশগ্রহণ করতে প্রচুর অর্থ দরকার যা অংশগ্রহণকারীর পক্ষে বহন করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে প্রতি দলের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে ৭ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও সেখানে যাতায়াত, খাওয়াসহ আরো আনুষঙ্গিক অনেক খরচ হয় যা শিক্ষার্থীদের সাধ্যের বাইরে।
তারা জানায়, ইতোপূর্বে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ব্যাপারে বিভাগকে আর্থিক সাহায্যের কথা জানানো হলে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েও কোন সহযোগীতা করেনি বিভাগটি। এমনকি সিএসই ক্লাব থেকেও কোন ধরণের সাহায্য করা হয়নি অংশগ্রহণকারীদের।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দেশ এবং দেশের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিএসই বিভাগকে উপস্থাপন করতে বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রতিযোগিতার সুযোগ থাকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিংবা বিভাগ থেকে আমাদেরকে সেই সুযোগ নিতে কোন ধরণের সাহায্য করেনা। এসব কাজের জন্য বিভাগে সিএসই ক্লাব থাকলেও সেখান থেকে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়না। অথচ এই ক্লাবে প্রতি সেমিস্টারে ৫’শ করে টাকা দেয় প্রতি শিক্ষার্থী।
তারা আরো জানান, ২০১৭ সালের একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হলে প্রশাসন থেকে ৫ হাজার টাকার দেওয়া হয়। এর আগে কিংবা এর পর থেকে আর কোন ধরণের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সহযোগিতা করেনি বিভাগ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে বিভাগটির শিক্ষার্থী এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বাপ্পী বলেন, আমরা যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে এই প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণ করি সেহেতু বিভাগের উচিৎ ছিলো আমাদের যাবতীয় খরচ বহন করা। কিন্তু বিভাগ এবং সিএসই ক্লাব আমাদেরকে হতাশ করেছে। আমরা চাই আমাদেরকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা এবং প্রোগ্রামিং কন্টেস্টগুলোতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে নিজেদেরকে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগকে সকলের কাছে তুলে ধরতে সাহায্য করবে।
বিভাগটির সহকারী অধ্যাপক ড. ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং কম্পিটিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমাদের বিভাগের যে সুনাম বয়ে নিয়ে এসেছে। সেটা আমাদের বিভাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গৌরবের। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে তাদের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পরবর্তী সেশনে অংশগ্রহণ অনেকটাই অনিশ্চিত। এ অবস্থায় বিভাগ ইচ্ছা করলেই তাদের পূর্ণ আর্থিক সহযোগিতা দিতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আশা করি বিভাগ এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ তা সত্য নয়। বিভাগ থেকে আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করে থাকি। গত প্রতিযোগিতায় তারা ১৯তম হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য বিভাগে মিটিং হয়েছে। যেহেতু এটা শিক্ষার্থীদের বিষয় সেহেতু এটা তাদেরকেই উদ্যোগ গ্রহণ করে বিভাগকে জানাতে হবে। কিন্তু তারা সেটা করেনা।
তিনি বলেন, তারা প্রোগ্রামের আগের দিন অথবা প্রোগ্রাম শেষ করে এসে বিভাগকে জানায়। এবার যে তারা যাবে এ বিষয়ে আমি কিংবা বিভাগ কোন কিছুই এখনো জানিনা। তারা আবেদন করলে তাদেরকে বিভাগ এবং সিএসই ক্লাবের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে আঞ্চলিক প্রাথমিক প্রতিযোগিতায় ডিএনএস এ্যাটাক সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে ১৮শ’ ৫টি দলের মধ্যে ১৯তম স্থান করে নেয় বেরোবির সিএসই বিভাগের (দীপু, নয়ন, শহীদুল) একটি দল।