তিতুমীর কলেজ গেটে ৩০ টাকায় চুড়ি বিক্রি করেন সবুরা খালা
ফুটওভার ব্রিজ থেকে নেমে তিতুমীর কলেজের প্রধান ফটকে ঢুকতেই হাতের ডান দিকে দেখা মিলবে পঞ্চাশোর্ধ পেরিয়ে যাওয়া সবুরা খালার। রঙচটা লালচে শাড়ি পরে নানান রকমের বাহারি রেশমি চুড়ি নিয়ে বসেন তিনি। জায়গাভেদে বেশি হলেও তিনি ৩০-৪০ টাকার ভেতরে ডজন চুড়ি বিক্রি করেন। সাধারণ রেশমি চুড়ি ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। আর বহুরঙা চুড়ির দাম ৪০-৫০ টাকার মতো হবে।
কারো পছন্দ লাল, কালো নীল, কেউ কালো রঙের রেশমি চুড়ি পছন্দ করেন। লাল-সাদা কিংবা কমলা নয়, সবুজ, হলুদ, নীল, আসমানিসহ নানা রঙের চুড়িতে সম্ভার সবুরা খালার ঝুড়িদ্বয়। অনেকে হাতে পরে দেখেন কেমন মানানসই হচ্ছে।
লোকমুখে প্রচলিত কথা, একসময় মেয়েরা শাড়ি-চুড়ি পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস করতে আসত। তবে সময়ের হাত ধরে বদলেছে সবকিছু। বদলেছে চুড়ির ধরন, উপাদান নানা কিছু। কিন্তু হাত ভরা রেশমি চুড়ির কদর এতটুকুও কমেনি। কলেজ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে সবুরা খালার চুড়ির আসর সেই কথাটাই মনে করিয়ে দেয়।
বেচাবিক্রি কেমন হচ্ছে শুনলে হা করে উপরে তাকিয়ে সবুরা খালা বলেন, ‘হা বাবা কি লইবা? সাংবাদিক পরিচয় জেনে তিনি খুব আগ্রহভরে চুড়ির সাথে জীবনের গল্প বললেন। খুঁটিনাটি সব বিষয়ই তার জানা তিতুমীর কলেজের।
তিনি বলেন, আমি ১২ বছর ধরে তুমাগো তিতুমীর কলেজের সামনে চুড়ি বেচি। স্বামী বয়সকালেই অসুস্থ হয়। তাই আর কি করার, ঝুড়ি কাঁন্ধে নিয়া চুড়ি বেচি। ৫ মেয়ে আছিলো সব বিয়া দিয়ে দিছি। একটা ছোডো ছেলে আছে। টু না থ্রি তে যেনো পড়ে। ওর জন্নিই আমার এতকষ্ট। যদি ভালো কইরে বেচি দিনে ৭/৮’শ আয় হয়।
সবুরা খালার চুড়ির দোকানে প্রায় সবসময় ভিড় দেখা যায়। কথা হয় বেশ কয়েকজনের সাথে। তনয়া তনু নামে এক শিক্ষার্থী জানান, সবুরা খালার কাছ থেকে আমি প্রতিমাসে নীল চুড়ি কিনতে আসি। সবকিছু ভালো হলেও আমার কাছে নীল চুড়ির দরদ বরাবরই একটু বেশি।
ফারজানা রিমি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, প্রথমে ভাবতাম কলেজের সামনে বলে বেশি দামে কিনতে হবে। তবে আমি পরে গুগল করে জানলাম আসলে উনি চুড়ির দাম ঠিকই রাখেন। আর পরেও বেশ আরাম আছে উনার চুড়ি।