বিজিবি-বিএসএফ গোলাগুলিতে ভারতীয় হেড কনস্টেবলের মৃত্যু
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন বিএসএফ’র এক কনস্টেবল। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে জলসীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে গিয়েছিলেন তিনজন ভারতীয় মৎস্যজীবী। তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়েছিল বিএসএফ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা সদরের বালুঘাট এলাকায় পদ্মা ও তার শাখা বড়াল নদীর মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।
বিএসএফের দাবি, বৃহস্পতিবার দুই মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করে ফেরার পথে আচমকাই বিজিবি গুলি চালায়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বিএসএফ-এর হেড কনস্টেবল বিজয়ভান সিংহের। তাঁর মাথায় গুলি লাগে। অন্য এক কনস্টেবল বিজিবি-র ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের চারঘাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রজনন মৌসুমের জন্য এখন নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় জেলেরা যেন নদীতে ইলিশ শিকার করতে না পারে সে জন্য বিজিবি সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নদীতে অভিযানে যায়। তারা দেখেন, পদ্মা-বড়ালের মোহনায় বাংলাদেশের সীমানার ভেতর একটি নৌকায় করে তিনজন ভারতীয় জেলে ইলিশ শিকার করছেন।
তিনি বলেন, তারা গিয়ে তাদের আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় দুইজন পালিয়ে যান। আর একজনকে আটক করা সম্ভব হয়। এ সময় পালিয়ে যাওয়া জেলেরা গিয়ে বিএসএফকে বিষয়টি অবহিত করে। বিএসএফ সদস্যরা এসেই গালাগালি শুরু করে। বিজিবি এর প্রতিবাদ করলে তারা গুলি ছোড়ে। তখন বিজিবির পক্ষ থেকেও গুলি ছোড়া হয়। একপর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটে।
এ ঘটনার পর একজন ভারতীয় জেলেকে আটক করে বিজিবির চারঘাট করিডর সীমান্ত ফাঁড়িতে আনা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে তার ইলিশ শিকারের জালও।
দেখুন: পদ্মায় ইলিশ শিকার নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ গোলাগুলি
বিজিবির মেজর আসিফ বুলবুল বলেন, একজন ভারতীয় জেলে আমাদের হাতে আটক রয়েছেন। শুনছি গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। বিকালে দুই বাহিনীর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক ডাকা হয়েছে।
দেখুন: ভারতীয় কনস্টেবলের মৃত্যু: আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় বিজিবি
অপরদিকে বিএসএপের দাবি, এ দিন সকালে জলঙ্গির তিন মৎস্যজীবী পদ্মায় মাছ ধরার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে যান। তখনই তিন জনকে বিজিবি আটক করে। বিষয়টি বিএসএফ-কে জানানো হয়। দু’পক্ষের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পর তিন জন মৎসজীবীর মধ্যে দু’জনকে ছেড়ে দেয় বিজিবি। কিন্তু, একজনকে তারা ছাড়তে নারাজ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে দু’জনকে নিয়ে কাটমারি চর বর্ডার পোস্টের দিকে ফিরছিল বিএসএফের পাঁচ জনের একটি দল। আচমকা পিছন দিক থেকে গুলি ছুটে আসে। বিজয়ভানের মাথায় গুলি লাগে।
ঘটনার পর দু’তরফে ডিজি পদমর্যাদার অফিসারদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। বিজিবি-র তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস মিলেছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।