শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তির টাকা আটকে রেখেছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড
কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অর্থ সংকটের কারণে নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও মেধাবৃত্তির টাকা উত্তোলন করতে পারেননি কুবি শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর মেধাবৃত্তির অর্থ জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় হতে ছাড় দেয়া হয়। তবে এ বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে মেধাবৃত্তির অর্থ উত্তোলনের নতুন নিয়ম করা হয়। এতে করে জুন-জুলাই মাসে বৃত্তির টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও এখনো এ অর্থ তুলতে পারেনি শিক্ষার্থীরা।
কমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একাডেমিক শাখা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের মোট ৩২৭ জন শিক্ষার্থী মেধাবৃত্তির টাকা পাবেন। এ হিসেবে সর্বমোট আঠারো লক্ষ নয় হাজার ছয়শত টাকা শিক্ষার্থীদের দেয়ার কথা রয়েছে। মেধাবৃত্তির এ অর্থ জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় হতে ছাড় করা হলেও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে মেধাবৃত্তির অর্থ উত্তোলনের নতুন নিয়ম করা হয়। নিয়মের পরিবর্তন ও শিক্ষা বোর্ডের অর্থ সংকটের কারণে তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বণ্টন করা যায়নি মেধাবৃত্তির অর্থ। ফলে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অর্থ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে নতুন নিয়মের জটিলতার সাথে যোগ হয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অর্থ সংকট। নতুন নিয়ম বুঝতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হয়েছে দাবি করে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘অর্থ আসতে বিলম্ব হওয়া ও প্রয়োজনের তুলনায় অর্থ কম আসায় আমরা অর্থ বিতরণ করতে পারছি না। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বরাদ্ধকৃত বৃত্তি ও মেধাবৃত্তির পরিমাণ হচ্ছে ১২ কোটি ৫০ লাখ। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন ১৬ কোটি ৫০ লাখ। আর এই অতিরিক্ত অর্থের সংকটের জন্যই অর্থ বিতরণ করতে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লাগছে।’ জটিলতা নিরসনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, মাউশির নিকটও চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃত্তিপ্রাপ্ত অন্তত পাঁচজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বললে তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রতিবছর জুন মাসে আমরা বৃত্তির টাকা পেয়ে আসছি। কিন্তু এবার বৃত্তির অর্থ উত্তোলন করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আমাদের নতুন সময়সীমা দিচ্ছেন। আমরা এবার আদৌ টাকা পাব কিনা এ নিয়ে সন্দিহান।’ বাংলা ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বৃত্তির টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশন ফি দিতাম। সামনে আমার পরীক্ষা। কিন্তু ফরম ফিলাপ হয়নি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মোশারফ হোসেন জানান, ‘প্রতিবছর আমরা জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয় থেকে অর্থ পেয়ে আসছিলাম। এবার কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আমাদের বৃত্তির অর্থ দিবে বলে জানায়। কিন্তু আমরা নিয়মিত শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করছি। তারা আমাদের অতিদ্রুত বৃত্তির অর্থ দিবে বলে জানিয়েছে।’