ভিসি আমার সন্তানের বাবা, সেই নারী এখন অফিস সহকারী (ভিডিও)
নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় অভিযুক্ত গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই নারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে অফিস সহকারী হিসেবে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আফরিদা খাতুন ঝিলিক (১৯) নামে ওই নারী বর্তমানে বশেমুরবিপ্রবি লাইব্রেরিতে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। বিষয়টি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নুরুদ্দীন আহমেদ।
তিনি বলেন, আফরিদা খাতুন ঝিলিক নামে একজন লাইব্রেরিতে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। তবে ঝিলিককে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে কেন লাইব্রেরীতে নিয়োগ দেয়া হল? এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুদ্দীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ত যে কাউকে যখন ইচ্ছা যেখানে ইচ্ছা নিয়োগ দিতে পারে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জের ভূতপূর্ব জেলা প্রশাসক (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে কর্মরত) মো. খলিলুর রহমান ২০১৬ সালে শেখ রাসেল দুস্থ পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টুঙ্গিপাড়ার অনাথ হিসেবে আশ্রিত ঝিলিককে নিজের মেয়ে হিসেবে লালন-পালন করে মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
পরবর্তীতে তিনি তার মেয়ে ঝিলিককে বশেমুরবিপ্রবির ভিসির কাছে চাকরির জন্য অনুরোধ করেন। ভিসি খোন্দকার নাসির উদ্দীন তাকে নিজ বাংলোতে আশ্রয় প্রদানসহ মাস্টার রোলে চাকরি দেন।
চাকরির পর ঝিলিকের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়েন ভিসি। একপর্যায় ঝিলিক অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তখন তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়া হলে ঝিলিক তাতে অস্বীকার করেন। ফলে ঝিলিককে চুরির অপবাদ দিয়ে তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিসির বাংলো থেকে বের করে দেয়া হয়।
অন্তঃসত্ত্বা ঝিলিক একটি সন্তানকে জন্ম দেন এবং সেই সন্তান উপাচার্য নাসির উদ্দিনের বলে দাবি করেন। সন্তানের পরিচয়ের দাবিতে তিনি ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। বিষয়টি তখন কয়েকজন ভিডিও ধারণ করেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ঝিলিক তার এক বছর বয়সী কন্যা সন্তানের পিতৃত্বের স্বীকৃতির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
এ সময় ঝিলিক ভিসিকে তার সন্তানের বাবা দাবি করে চিৎকার দিয়ে বলেন, আমার সন্তানের বাবা ভিসি। এই সন্তানের সঙ্গে ভিসির চেহারার অনেক মিল আছে।
আফরিদা খাতুন ঝিলিকের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন চাকরি দেয়ার কথা বলে তাকে বিভিন্ন সময় যৌন নির্যাতন করেন। সেইসঙ্গে ভালোবাসার ছলনার প্রলুব্ধ করে দিনের পর দিন ভিসির বাংলোয় রেখে ওই নারীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক করেন ভিসি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নির্যাতিত ঝিলিক বলেন, আজ আমি সবকিছ ফাঁস করে দেব। খুলে দেব মানুষ নামের নরপশুর মুখোশ। আমার সন্তানের বাবা তুমি। আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছো। আমার কাছে তোমার সব অপকর্মের প্রমাণ আছে। সবার সামনে তোমার মুখোশ খুলে দেব।
‘তুমি এতিম-আমিও এতিম, তুমি আমার কষ্ট বুঝবে-আমিও তোমার কষ্ট বুঝবো’ এমন সব আবেগী ও প্রেমময়ী কথা দিয়ে ভিসি নাসির আমার সব কিছু কেড়ে নেয় বলেও দাবি করেন ঝিলিক।