জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে: খুবি উপাচার্য

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন, জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে কৃষি ফসল বৈচিত্র্য সর্বত্র বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততার প্রভাবে অনেক ফসলই হারিয়ে যাচ্ছে, প্রকৃতিগতভাবে টিকে থাকতে পারছে না। তাই উপকূলীয় অঞ্চল জলবায়ুগত প্রভাবের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কৃষিতে পরিবর্তনের এই বাস্তবতা এবং প্রতিকূলতা মেনে নিয়েই সামনে এগোতে হবে।

তিনি বলেন, জলবায়ুগত পরিবর্তনে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন উপকূলীয় এলাকার জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় গবেষণায় বাস্তবতাকে সবিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এই অবস্থায় লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার জন্য তিনি কৃষি বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি আহবান জানান।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ‘সাসটেইন্যাবল ক্রপ এন্ড লাইভস্টক ফার্মিং ইন কোস্টাল এরিয়াস অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের আয়োজনে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী, জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. রায়হান আলী, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম স্পেশালিষ্ট (ফিল্ড ক্রপ) ড. মো. হযরত আলী এবং খুবির গবেষণা সেলের পরিচালক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মো. সরদার শফিকুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. সারওয়ার জাহান।

অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউট, প্রাণী সম্পদ বিভাগসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধান এবং সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বোধন পর্বের পর প্রফেসর ড. মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ৭টি গবেষণা বিষয়ে এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের ৪জন পিএইচডি গবেষকসহ ৭জন কৃষিবিদ ও গবেষক তাদের গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

উল্লেখ্য, উপকূলীয় লবণাক্ত জমিতে জন্মাতে পারে এবং এই আবহাওয়ায় টিকে থাকতে পারে এমন কয়েকটি ঘাসের উপর গবেষণা চালিয়ে প্রফেসর ড. মো. শফিকুল ইসলাম এমন একটি জাত নির্বাচন করেছেন যার উৎপাদন বেশি এবং জমিতে বিদ্যমান সর্বোচ্চ লবণাক্ততা ও বিরূপ আবহাওয়াতেও টিকে থাকতে পারবে। পাকচোং জাতীয় ঘাস চাষে উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় পশু খাদ্য সংকট নিরসনে সহায়ক হবে। এর উৎপাদন হেক্টর প্রতি ১৫০টন, দেখতে ভুট্টা গাছের মতো মোটা, দীর্ঘ ও নরম।

তিনি তার গবেষণালব্ধ ফলাফল উপস্থাপন করে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন এই ঘাস চাষে কৃষকদের জন্য বিশেষ উপকারে আসবে এবং তা গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। এদিকে এই গবেষণা প্রকল্পে ১ জন পিএইচডি গবেষক এবং ৬ জন আন্ডার গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী কাজ করেছেন বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ