একাডেমিক কার্যক্রম শুরুর আগেই কর্মচারীদের আন্দোলন শুরু
পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি শেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই আন্দোলন শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সংগঠন ‘কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন কর্মচারীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পুনরায় অচল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কর্মবিরতি, মৌন-মিছিল, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর থেকে ঈদুল আযহার মধ্যবর্তী সময় অতিবাহিত হয়েছে। তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির শেষ কার্যদিবস পর্যন্ত আন্দোলন করেন কর্মচারীরা। এতে প্রায় দেড় মাস বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। পবিত্র ঈদুল আযহার ১৪ দিনের ছুটি শেষে গতকাল সোমবার থেকে প্রশাসনিক এবং মঙ্গলবার থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার একদিন আগেই আবার আন্দোলন শুরু করেন কর্মচারীরা।
কর্মচারীরা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রশিদুল হক বলেন, ‘দাবি আদায় না হওয়ায় আবার আমাদের কর্মবিরতি শুরু করেছি। আন্দোলন করার কারণে তাদের তিন কর্মচারীকে বহিস্কার করা হয়েছে। উপাচার্য স্যার এ বিষয়ে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক সেলিম স্যারের সাথে কথা বলতে বলেছেন। আমরা তাঁর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আন্দোলনের সাথে কর্মচারী বহিস্কারের কোন যোগাযোগ নেই।’ কর্মচারীরা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ২২ শে আগস্ট কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মিটিংয়ের পর আমরা আন্দোলনের সার্বিক সিদ্ধান্ত নেব।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে ৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ। প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে আন্দোলন করায় বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম। কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ, নীতিমালা প্রনয়ন ও সময় মতো পদোন্নতি এবং বরখাস্তকৃত তিন কর্মচারীকে বহাল। কয়েকদফায় আলোচনায় বসেও সমাধান না হওয়ায় শেষ কার্যদিবসের আগেরদিন পর্যন্ত আন্দোলন করেন কর্মচারীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটির শেষ দিন গত মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) উপাচার্যের সাথে আলোচনায় বসেন কর্মচারী পরিষদ। আলোচনায় ঈদের ছুটির মধ্যে কর্মচারীদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন উপাচার্য। ছুটি শেষে কোন ধরনের সমাধান না পেয়ে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ঢাকায় অবস্থান করায় ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি পোন রিসিভ করেননি।
তবে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক আর. এম. হাফিজুর রহমান সেলিম বলেন, ‘ঈদুর ছুটিতে সবাই ব্যস্ত থাকায় কর্মচারীদের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এর আগে কর্মচারীদের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রায় ১৫ বার তাদের সাথে আলোচনায় বসার পরও তারা কোন সিদ্ধান্ত মানেনি। একটি স্বার্থন্বেষী মহল ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার জন্য কর্মচারীদের আন্দোলন নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। আমরা খুব শ্রীঘ্রই তাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।