সাত বছরেও কোন শিক্ষক পায়নি কমার্সের শিক্ষার্থীরা
ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে কোন শিক্ষক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজে। জেলার স্বনামধন্য সরকারি মহিলা কলেজে সাত শিক্ষাবর্ষ ধরে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হলেও এই বিভাগে কোন শিক্ষক নেই। ফলে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
জয়পুরহাট সরকারি মহিলা কলেজ সূত্র জানায়, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে চালু করা হয় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ। ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার জন্য শিক্ষকের কোন পদও নাই, শিক্ষকও নাই। অথচ বিষয়ও রয়েছে, প্রতি বছর শিক্ষার্থীও ভর্তি করা হচ্ছে। আবার শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করা হচ্ছে যাবতীয় ফি।
এনিয়ে বে-কায়দায় পড়া কলেজ প্রশাসন অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমানত আলি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অনমতি নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে বার বার আবেদন পাঠানো হলেও এ বিষয়ে দীর্ঘ দিনেও কোন সুরাহা হয়নি। বাহির থেকে নেওয়া ২ জন অতিথি শিক্ষক নিয়ে দায় সারা ভাবে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করা ফি থেকে অতিথি শিক্ষকদের সম্মানী প্রদান করা হয়ে থাকে। অতিথি শিক্ষকরা অন্য কলেজের শিক্ষক হওয়ায় নিজের কলেজের শিক্ষার্থীরা যেমন বঞ্চিত হচ্ছে আবার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও পুরো সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ফেল করার হার তুলনামূলক বেশি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির মূখে পড়েছে।
কলেজের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় অংশগ্রহন করে ২০১৪ সালে ৬৬ জনের মধ্যে ফেল করে ৭ জন, ২০১৫ সালে ৬৭ জনের মধ্যে ফেল করে ৫ জন, ২০১৬ সালে ৬১ জনের মধ্যে ফেল করেছে ৬ জন, ২০১৭ সালে ৭১ জনের মধ্যে ফেল ২৬ জন, ২০১৮ সালে ১০১ জনের মধ্যে ফেল ৪৩ জন, ২০১৯ সালের ফলাফলে ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ৪৬ জন। বর্তমানে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১৬৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার সময় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমানত আলি সুপারভিশন কর্মকর্তা হওয়ার পরেও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিজেই দুটি করে ক্লাস করে থাকেন বলে জানালেন।
শিক্ষক না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে বলে জানান, দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী তনিমা আফরিন, পপি আকতার ও রেশমা আকতার।
গনিত বিভাগের শিক্ষক সিদ্দিক মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে জরুরী ভিত্তিতে পদ সৃষ্টি করা ও শিক্ষক দেওয়া দরকার। সংযুক্ত দিয়ে হলেও দ্রুত শিক্ষকের প্রয়োজন বলে জানান, কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমানত আলি।