০৭ আগস্ট ২০১৯, ১৯:০০

ডেঙ্গু সচেতনতায় মাঠে নেমেছে প্রাইভেট মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা

সরকার ও চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় ডেঙ্গু ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সবাই যদি সবার বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে সকল ধরণের প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি, তাহলে গোটা দেশকে ডেঙ্গু মুক্ত করা যাবে। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক এক কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

বিপিএমসির সভাপতি এম এ মুবিন খানের সভাপতিত্বে রাজধানীর প্রেস ক্লাবে সচেতনতামূলক এই কর্মসূচি উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই কর্মসূচিতে টেলিফোন বার্তায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সকল ডেঙ্গু রোগীর সুচিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য সবকিছু করবে। সকলে যে যার অবস্থান থেকে এডিস মশার উৎপত্তিস্থল নির্মূলে সক্রিয় হোন।

এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে এতে অংশ নেওয়া ঢাকা ও আশপাশের বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন এবং ঘরে ঘরে গিয়ে ডেঙ্গুর বিভিন্ন দিক নিয়ে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিপিএমসির সভাপতি এম এ মুবিন খান স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, বিপিএমসি-এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে মনিটরিং সেল গঠন, ডেঙ্গু কর্ণার স্থাপন, গরীব রোগীদের জন্য বিনামূল্যে চেকআপ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিপিএমসিএর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু নিয়ে সারা বছর সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো। বিশেষ করে মৌসুম শুরু হওয়ার দুই মাস আগে থেকে মেডিকেল কলেজের আশপাশের এলাকাগুলোতে মাইকিং করে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে জানানো, যেন মানুষ বদ্ধ জায়গায় পানি জমিয়ে না রাখে। মশার ঔষধ ছিটিয়ে দেওয়া। অন্তত নিজ-নিজ বাসা-বাড়ি যেন পরিষ্কার রাখে। সারা বছর বিপিএমসিএ এ ধরণের সচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে মানুষকে উদ্বুদ্ধকরণ ও জনসচেতনতা গড়ে তুলবে।

এই কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ, বিপিএমসিএর সাবেক সভাপতি ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ, ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান পৃথী চক্রবর্তী প্রমুখ।

আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল ইসলাম, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. রেজওয়ানুল কবীর, তায়রুন্নেসা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক হাবিবুল হকসহ অনেকে।

এতে বক্তারা জানান, ডেঙ্গু নিয়ে গণসচেতনতা তৈরি করা গেলে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ নিয়ে যে আতংক তৈরি হয়েছে তা দূর করা যাবে। রোগী সচেতন হলে ঝুঁকি এড়ানো যায়। কিন্তু দেরি হলে ঝুঁকি তৈরি হয়। প্লাজমা লিকেজ বা রক্তের তরল অংশ কমে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়।

তাই প্রয়োজনীয় ওরস্যালাইন, ডাবের পানি ও লেবুর শরবত এসব প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। যাতে প্রেশার কমে রোগীর শকড সিনড্রোম পর্যন্ত না যায়। আর এতটুকু করা গেলে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

বক্তারা আরও বলেন, ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট বা তরল খাবার ঠিকমতো খেলে ডেঙ্গু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। জ্বর চলে গেলে রোগীকে সচেতনভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। তাহলে আর সমস্যা হবে না।