এবার বিদায় নিলেন ঢাকা কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী অভি

নিহত অভি
নিহত অভি  © সংগৃহীত

ঢাকা কলেজের অভি নামের সাবেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিয়ুন। আজ রোববার সকালে বরিশালে অফিসিয়ার ট্যুরে মারা যান তিনি। ঠিক কী কারণে মারা গেছেন তার পরিবার এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। পরিবার লাশ আনতে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন বলে জানায় তার বন্ধুরা। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত  হয়ে মারা যেতে পারেন বলে ধারণা করছেন সহপাঠীরা। 

নিহত অভির বন্ধুরা জানান, তিনি ২০১০ সালে কমার্স গ্রুপ থেকে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। তার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী। পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর উত্তরায় থাকতেন। তিনি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বরিশালে অফিসিয়ার ট্যুরে ছিল। সেখানেই আজ রোববার সকালে মারা গেছেন। 

এদিকে ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিন প্রচুর সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। এছাড়া ইডেন মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থীও ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তাই অনেকে ধারণা করছেন, হয়তো অভিও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন।

অভির সহপাঠি মাহমুদ আরিফ বিকাল তিনটার দিকে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা একসাথে ২০১০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করি। আমি বিজ্ঞান বিভাগে ছিলাম। আর অভি ছিল কমার্স গ্রুপে। আমরা অভির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু ঠিক কী কারণে অভির মৃত্যু হয়েছে তা জানাতে পারেননি পরিবার। এছাড়া তার কর্মস্থলের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমাদের ধারণা তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন।

এদিকে শনিবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী উখিংনু রাখাইনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের প্রথম বর্ষের (৪৮ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ও প্রীতিলতা হলের আবাসিক ছাত্রী ছিলেন। তিনি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তা মংবা অং মংবার মেয়ে। 

এর আগে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফিরোজ কবীর স্বাধীনও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ব্যবসায় অনুষদের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকতেন।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই দেশে রেকর্ডসংখ্যক ১০ হাজার ৫২৮ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে। সে হিসেবে ১৮ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬৮৩ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এক দিনের হিসেবে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। এছাড়া গত ১০ বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯ গুণ বেড়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক হাজার ১৫৩ জন। তবে ওই বছর েকেউ মারা যায়নি। গত বছর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ হাজার ১৪৮জন। প্রাণ গেছে ২৬ জনের।

এছাড়া গত বছরের জুনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৯৫ জন, সেখানে চলতি বছরের জুনে এ সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে এক হাজার ৭৫৩ জনে দাড়িয়েছে। আর গত বছরের জুলাইয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪৬ জন। সেখানে এ বছর জুলাইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন সাত হাজার ৫১৩ জন।


সর্বশেষ সংবাদ