সাবেক শিক্ষার্থী রেনু হত্যার প্রতিবাদে সড়কে তিতুমীর কলেজ
রাজধানীর বাড্ডায় ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। নিহত রেনু তিতুমীর কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মহাখালীতে কলেজের মূল ফটকে মানববন্ধনে অংশ নেন তারা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে কলেজের অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন, উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবেদা সুলতানা, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার মায়া, সাংবাদিক নেতা মানিক মুনতাসীর ও মাহবুব জুয়েল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাছেক, বর্তমান সভাপতি মো. রিপন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক জুয়েল মোড়লসহ তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন মাসুদ প্রমুখ।
সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মানববন্ধনের সমন্বয়ক ও সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হল-
১. দ্রুত রেণু হত্যার বিচার।
২. দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।
৩. নিহত রেণুর অবুঝ দুই সন্তানের দায়িত্ব নিতে হবে।
৪. গুজবরোধে আলাদা কার্যকর একটি 'সেল' গঠন।
কলেজ অধ্যক্ষ মো. আশরাফ হোসেন বলেন, সাবেক এ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। বাংলাদেশ সরকার ও প্রশাসন এই নির্মম হত্যার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেবে। গুজব সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে এর উপযুক্ত বিচার চাই।
ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, আমরা এভাবে আর সড়কে দাঁড়াতে চাই না। আমার বোন হত্যার শাস্তি চাই। গুজববিরোধী প্রচারণায় প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ এতে সহায়তা করবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এমন নৃশংস ঘটনার আর দেখতে চাই না। আমরা রেনু আপার পরিবারের পাশে থাকব। তার দুই ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ যাতে অন্ধকার না হয়ে, এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বক্তারা বলেন, তিতুমীর কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী তাসলিমা বেগম রেনুর এমন নির্মম হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। হত্যায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। নিরীহ রেনুর দুই সন্তানের দেখভালের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রসঙ্গত গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেয়েকে ভর্তির জন্য স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা বেগম রেনু। পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসেনের সঙ্গে রেনুর ডিভোর্স হয়। তাদের সংসারে তাসফিক আল মাহি (১১) ও তাসলিমা তুবা নামের দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে রেনু হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।