১৫ জুলাই ২০১৯, ১৪:২০

উঁচু দালান নির্মাণ উন্নয়নের প্রতীক নয়, জাবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রকৃতি, পরিবেশ ও গাছপালা ধ্বংস করে তিনটি ১০তলা বিশিষ্ট হল নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘উঁচু দালান নির্মাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের প্রতীক নয়।’

আজ সোমবার বেলা একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কার্যালয় বলে পরিচিত পুরনো রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

রবীন্দ্রনাথ হলের শিক্ষার্থী আরিফ ফয়সাল শাওনের সঞ্চালনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘পাঁচ তলা বিশিষ্ট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আশেপাশে অপরিকল্পিতভাবে যে তিনটি ১০ তলা হল নির্মিত যাচ্ছে এতে কোন ধরনের খেলার মাঠ নেই, আলো বাতাসের পর্যাপ্ত সুবিধা নেই, বস্তির মতো হল নির্মানের ফলে শিক্ষার্থীদের মাদক সেবন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তারিকুল আলম বলেন, ‘নতুন নতুন হল নির্মাণ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে অথচ রবীন্দ্রনাথ হলের এখন পর্যন্ত উদ্বোধন করতে পারেনি প্রশাসন। হলে কোন রিডিং রুম নেই, খাবারের সঠিক ব্যবস্থা নেই, ক্যান্টিন নেই, হলের ডিজাইনে আয়তন ছোট করে ফেলা হয়েছে। এত এত সমস্য সমাধানে কোন খবর নেই। উন্নয়নের নামে নতুল হল দিয়ে আবার প্রকৃতি ধ্বংসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

রবীন্দ্রনাথ হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী দর্শন বিভাগের ৪৬তম আবর্তনের ছাত্র মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিনিকেতন একটি অসম্ভব রকমের সুন্দর জায়গা। যেখানে বিলুপ্তপ্রায় অনেক গাছ এবং প্রাণীকুল বসবাস করে। এছাড়াও এর সাথে লেক শান্তিনিকেতনকে অনন্য করে তোলে। অথচ প্রশাসনের খামখেয়ালি পরিকল্পনায় ওখানে তিনটি ১০ তলা হল নির্মান করে লেকের পানি বুড়িগঙ্গায় রূপান্তরিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘হল নির্মাণে অনেক ফাঁকা জায়গা পড়ে আছে, সেদিকে তাদের খেয়াল নেই। অযথাই শান্তিনিকেতনের ইকো সিস্টেম ধ্বংস করা হচ্ছে। উঁচু দালান নির্মাণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের প্রতীক নয়।’

৪৪তম আবর্তনের আরেক শিক্ষার্থী ওদুদ বলেন, ‘ভিসি ম্যাম বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর হবে একটি নগর। যা সম্পূর্ণ প্রকৃতি ও পরিবেশবিরোধী বক্তব্য। আমরা এর প্রতি ধিক্কার জানাই।’

মানববন্ধনে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে উপস্থিত হন। যেখানে লেখা ছিল, ‘মাঠে থাকবে বল, মাঠে কেন হল’, ‘হল চাই হল হবে, বন রক্ষাও করতে হবে’, ‘খেলার মাঠ ধ্বংস করে হল নির্মান চলবে না’, ‘শিক্ষার সাথে সৌন্দর্য জাহাঙ্গীরনগরের ঐশ্বর্য’।