কোষাধ্যক্ষ নেই দুই বছর, ভারপ্রাপ্তে ভারাক্রান্ত অন্য পদগুলো
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বছরেরও বেশী সময় ধরে কোষাধ্যক্ষ পদটি শূন্য রয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় আইনে প্রো-ভিসি, পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ), পরিচালক (বহিরাঙ্গন) এবং পরিচালক (শরীরচর্চা শিক্ষা) পদসমূহের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেই। আর বেশ কয়েকটি পদ চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। এতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কুন্ড গোপীদাসের মেয়াদ শেষ হয়। এর প্রায় ২ বছর ২ মাস পেরিয়ে গেলেও এ পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। দীর্ঘ এ সময় কোষাধ্যক্ষের পদ শূণ্য থাকায় কোষাধ্যক্ষের কাজগুলো দেখছেন উপাচার্য। এতে উপাচার্যের উপর কাজের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে উপাচার্য না থাকলে এ দপ্তরের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। বর্তমান উপাচার্যের পূর্ববর্তী উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলী আশরাফের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীর নিয়োগে দুই মাস বিলম্ব হয়। এসময় কোষাধ্যক্ষ না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২ মাসের বেতন ভাতা আটকে ছিলো। এদিকে ২০১৩ সালে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬’ এর ১১ ধারা সংশোধন করে উপ-উপাচার্যের পদসৃষ্টি করা হয়। পদসৃষ্টির পর প্রায় ৬ বছর পার হয়ে গেলেও এই পদে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ), পরিচালক (বহিরাঙ্গন) এবং পরিচালক (শরীরচর্চা শিক্ষা) পদ সমূহের উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে এ পদগুলোতে কোন কর্মকর্তা নেই। গবেষণা পরিচালক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে এর প্রভাব পড়ছে। এছাড়া অন্য পদগুলোও খালি থাকায় বিভিন্ন সময় প্রশাসনিক জটিলতার তৈরী হয়।
এছাড়াও পরিচালক (অর্থ ও হিসাব), পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, জনসংযোগ কর্মকর্তার পদে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে কার্যক্রম চলছে। অর্থ ও হিসাব দপ্তরে কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া কে ভারপ্রাপ্ত পরিচালকের দায়িত্ব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে মোহাম্মদ এমদাদুল হককে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। লাইব্রিয়ান পদে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদারকে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে লাইব্রিয়ান পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘যে পদ গুলোতে বর্তমানে কর্মকর্তারা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছে তার মধ্যে অনেক পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং বাকী পদগুলোতেও নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এছাড়া গবেষণা ও সম্প্রসারণের জন্য খুব শীঘ্রই পৃথক একটি দপ্তর চালু করে গবেষণায় অভিজ্ঞ একজন শিক্ষককে এখানে দায়িত্ব প্রদান করা হবে। বহিরাঙ্গনের জন্যও পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’
উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘এই দুইটি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বারবার বলেছি। বিশেষ করে কোষাধ্যক্ষ পদে কাউকে নিয়োগ দিলে আমার উপর চাপ কমতো।’