৭ বছর আইনি লড়াই, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হচ্ছেন বঞ্চিত ইউসুফ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাত বছর আইনি লড়াই করে অবশেষে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে ১৪ জুলাই যোগদান করতে যাচ্ছেন ইউসুফ। ১১ জুলাই ৬২তম সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে তার নিয়োগ কার্যকর হলে একই দিনে ইউসুফের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউসুফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন ও উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ স্যারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনি আইনের প্রতি অনেক শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন এজন্য তাকে ধন্যবাদ। সাবেক এক উপাচার্যের আমলে বাছাই বোর্ডের সুপারিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করে ১ম স্থান অধিকার করার পরেও আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। যারা আমার প্রতি অন্যায় করেছিলেন তারা আজ পরাজিত। আমি সাত বছর পর ন্যায়বিচার পেলাম। আশা করি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আমার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রদান করবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, আমি বরাবর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই হাইকোর্টের চূড়ান্ত নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছি। শুক্রবার ও শনিবার ছুুটি থাকার কারণে ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার ইউসুফের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয়া হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করবেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই ৩০ দিনের মধ্যে ইউসুফকে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি জোবায়ের রহমান চৌধুরী এবং বিচারপতি শশাংক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এক রায়ে এ নির্দেশ দেন। ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ৬২তম সিন্ডিকেট সভায় ইউসুফকে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং এই দিনই ইউসুফ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অন্য বিভাগের পাশাপাশি ইতিহাস বিভাগে তিনজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে সাক্ষাৎকারের জন্য সাতজন আবেদনকারী বাছাই বোর্ডের সম্মুখীন হয়। তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে সুপারিশ করে বাছাই বোর্ড। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন করে ১ম জনকে বাদ দিয়ে ২য় ও ৩য় জনকে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
এতে মেধা তালিকার প্রথম স্থানে থাকা ইউসুফ হাইকোর্টে রিট পিটিশন মামলা দায়ের করেন। রিটের প্রেক্ষিতে কেন তার নিয়োগপত্র ইস্যু করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে ওই বিভাগে একটি ‘প্রভাষক’ পদ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। (রিট পিটিশন নং-৩৫৭২/২০১৪.)। বাছাই বোর্ডের সুপারিশপত্রে মেধাক্রমে প্রথম স্থান অধিকারকারী ইউসুফকে নিয়োগ না দিয়ে মেধাক্রমে ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারকারীকে নিয়োগ দেয়ায় এ রায় দেয়া হয়।
এর আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে একই রকম স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ৭ বছর পর ওই বিভাগে যোগদান করেন নিয়োগ বঞ্চিত মাহামুদুল হক।