এই প্রথম গরুর ব্রুসেলোসিস রোগের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত
দেশে প্রথমবারের মত গরুর ব্রুসেলোসিস রোগের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম। গবেষক দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকুমার সাহা, ড. মোছা. মিনারা খাতুন এবং পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. সাদেকুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রুসেলা অ্যাবোরটাস’ (Brucella abortus) নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে বাংলদেশে গরু ও মহিষে ব্রুসেলোসিস রোগ হয়ে থাকে। ব্রুসেলোসিস একটি জুনোটিক (যা একই সঙ্গে মানুষ এবং গবাদি পশুতে সংক্রমিত হয়) রোগ। এ রোগে আক্রান্ত গাভীর সাধারণত গর্ভপাত হয়ে থাকে। ‘ব্রুসেলা অ্যাবোরটাস’ ব্যাকটেরিয়ার প্রায় ৮ টি ভ্যারাইটি থাকায় দেশে কোনটি দ্বারা এ রোগ হয় তা এতদিন অজানা ছিল। ব্যাকটেরিয়ার এ সকল ভ্যারাইটিকে বায়োভার বলা হয়। ২০১৫-২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ তিন বছরের গবেষণা করে দেশে গরুর ব্রুসেলোসিস রোগের জন্য দায়ি ‘ব্রুসেলা অ্যাবোরটাস বায়োভার-৩’ ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে আক্রান্ত প্রাণীর রক্ত বা দুধে এই রোগের অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নির্ণয়ের মাধ্যমে ব্রুসেলোসিস রোগ সনাক্ত করা হয়। গবাদি পশুতে এ রোগ সনাক্ত করার জন্য রোজ ব্যাঙ্গল প্লেট টেস্ট, ইলাইসা, মিল্ক রিং টেস্ট ব্যাবহার করা হয়। তবে এই পরীক্ষা গুলো অনেক সময় আক্রান্ত প্রাণীতে সঠিকভাবে ব্রুসেলোসিস রোগ নির্ণয় করতে পারে না। তাই কোন প্রাণীতে ব্রুসেলোসিস নিশ্চিত করার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো আক্রান্ত প্রাণী থেকে এ রোগের ব্যাকটেরিয়া সনাক্ত করা। এই কথা চিন্তা করেই ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার গবেষণাটি সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও এ ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণ জিনোম সিকুয়েন্স করা হয়েছে যা অ্যামেরিকার নেশন্যাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন এর জিন ব্যাংকে জমা করা হয়েছে। আর এই জিনোম সিকুয়েন্স ব্যবহার করে ব্রুসেলোসিস রোগ নির্ণয় পদ্ধতি এবং এর কার্যকর টিকা উদ্ভাবন সম্ভব হবে। যেহেতু ব্রুসেলোসিস একটি জুনোটিক রোগ গরুতে এই রোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হলে মানুষেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব হবে।