২৬ জুন ২০১৯, ২১:৫২

২ শিক্ষক দিয়েই চলছে মেকানিক্যাল বিভাগ, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

  © টিডিসি ফটো

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে বিভাগটির শিক্ষক, ল্যাব এবং প্রয়োজনীয় আসবাব পত্রের জন্য আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিভাগটির বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের অনুষদের সামনের রাস্তায় আন্দোলনের অংশবিশেষ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

অবস্থান কর্মসূচি বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম নামের লেভেল-৩ সেমিস্টার-২ এর এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম ব্যাচ। আমাদের পরে আরো ৩ টি ব্যাচ এসেছে। ৪ বছরে আমাদের বিভাগে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু বাড়েনি কোন শিক্ষক সংখ্যা, স্থাপিত হয়নি কোন ল্যাব। মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়েই চলছে আমাদের দুইশ শিক্ষার্থীর ক্লাস।

এ শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, এতো সংকটেও প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই শিক্ষক নিয়োগে। যেখানে আমাদের কমপক্ষে আরো ৫ জন শিক্ষক প্রয়োজন, সেখানে আছে মাত্র ২ জন শিক্ষক। শিক্ষকের অভাবে ঠিকভাবে কোন ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। যার ফলে প্রায় ৭ মাসের সেশন জটে রয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। বাধ্য হয়েই আজ আমরা মাঠে নেমেছি। বিভাগটির জন্য উপযুক্ত শিক্ষকসহ প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথাও জানিয়েছেন এ শিক্ষার্থী।

তানভীর আহমেদ ও ওমর ফারুক নামের লেভেল ৩ সেমিস্টার-২ এর আরো দুই শিক্ষার্থী জানান, ২০১৬ সালে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে মাত্র ২ জন শিক্ষক দিয়েই আমাদের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। বিভাগটি চালুর ৪ বছর কেটে যাওয়ার পরও এখনো ঐ দুইজন শিক্ষকই আছেন। আমাদের ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব কোন চেয়ারম্যান স্যারও নাই। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ সিদ্দিকুর রহমান স্যার।

তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, যেখানে আমাদের অন্তত ৫টি বেসিক ল্যাব থাকা অপরিহার্য, সেখানে একটিও ল্যাব নেই। অন্য ডিপার্টমেন্ট আমাদের ইকুপমেন্ট তৈরির অর্ডার দিচ্ছে কিন্তু নিজের হাতে আমরা যে ল্যাব ইকুইপমেন্ট (ল্যামিনার এয়ার ফ্লো, ইনকিউবেটর, হিট ট্রান্সফার) গুলো তৈরি করেছি সেগুলো রাখার কোন জায়গা নেই।

তানভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ১বছর পর বের হয়ে যাব। কিন্তু শুধু একটা সার্টিফিকেট আর ইউটিউবে দেখা ল্যাবের জ্ঞান ছাড়া ব্যবহারিকের কোন জ্ঞান অর্জন করা হলো না আমাদের।

রোকনুজ্জামান নামের লেভেল ২ সেমিস্টার ১ এর এক শিক্ষার্থী জানান, ঈদের আগে (ঈদুল ফিতর) লেভেল ১ সেমিস্টার ২ এর ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে গিয়েছি। কিন্তু ঈদের পর এসে এখনো ক্লাস শুরু করতে পারিনি। যেখানে অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের সবাই ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে। আমাদের ব্যাচটি প্রায় ৬ মাসের সেশন জটে রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সার্বিক বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মারুফ আহমেদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা যে সমস্যার কথা গুলো বলছে সেগুলো নিয়েই আমরা কাজ করছি। একজন শিক্ষককে নিতে গেলেও কিছু প্রসিডিউর আমাদের ফলো করতে হয়।

তিনি জানান, আমি এই বিষয় গুলো নিয়ে রেজিস্ট্রার স্যারের সাথে কথা বলছি। আমরা তাদের কাছে ১০ কার্যদিবস সময় নিয়েছি । এই সময়টুকু তো তাদেরকে দিতে হবে। আমি তাদের বলবো তারা যেন ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে যায়। বাকি এ কয়েকটি দিন ধৈর্য ধারণ করলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে আশা করছি।