২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:২৫

ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম ডিগ্রি নিতে, এখন সে লাশ হয়ে ফিরেছে—নিহত জুবায়েদের বাবা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জুবায়েদ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাবা মোবারক হোসাইন  © টিডিসি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসাইনের বাবা মোবারক হোসাইন বলেছেন, আমার ছেলে জুবায়েদকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম একটা ডিগ্রী অর্জনের জন্য, কিন্তু সে এখন আমার বাড়িতে লাশ হয়ে ফিরে এসেছে। আমার স্বপ্ন কবরে চলে গেছে। 

আজ রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলামের ও জুবায়েদ হোসাইনের নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আক্ষেপ করে একথা বলেন তিনি। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, আপনাদের কাছে একটাই চাওয়া আমার ছেলের হত্যাকারীর যেন দ্রুত বিচার হয়। এ ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম, ট্রেজারার অধ্যাপক সাবিনা শরমীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ্ উদদীন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্য সচিব শামসুল আরেফিনসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান এবং সাবেক নেতাকর্মীরা।

আরও পড়ুন : পুলিশের সব বক্তব্যকে পুরোপুরি মিথ্যা বললেন বর্ষার বাবা

দোয়া মাহফিলে রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমরা বলি না যে, আমাদের শতভাগ নেতাকর্মী জুবায়েদ ও সাম্যের মতো নৈতিক চরিত্রের নয়, কিছু খারাপ আছে। আমরা সেটা স্বীকার করে রাজনীতি করি। স্বল্প সময়ে আমাদের অনেক নৈতিক চরিত্রের নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। আমরা স্বীকার করি, কিছু খারাপ আছে, তবে বেশিরভাগই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী আমরা সেটা মেনে রাজনীতি করি। আমাদের সর্বক্ষেত্রে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে হবে শিক্ষার্থীদের। জুবায়েদ হত্যার দিন স্থানীয়রা দেখেছে কিন্তু তারা প্রতিবাদ জানায়নি। তবে স্থানীয়রা দেখেছে শিক্ষার্থীরা কিভাবে প্রতিবাদ জানায়। 

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১৪২ শহীদ হয়েছেন। কিন্তু জুলাই পরবর্তী সময়ে সাম্য ও জুবায়েদের মতো নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। পারভেজ হত্যার পর প্রশাসন গড়িমসি করেছে।

জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, হাসিব দেশকে স্বৈরাচার মুক্তির জন্য ভূমিকা রেখেছে। তার সেই লক্ষ্য পূরণ করতে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একই সাথে জুবায়েদের মৃত্যুর সঠিক বিচার সুনিশ্চিত করতে হবে। এতে তার আত্মা, পরিবার সকলেই শান্তি পাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সকলের সহযোগিতায় এটার দ্রুত প্রতিকার পেয়েছি। আমরা খবর পেয়েছি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে দেওয়া হবে। আজ সকালেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বনামধন্য একটি উকিল দেওয়ার ফাইল তৈরি করেছি। আমরা নিয়মতান্ত্রিক যত উপায় আছে, সবদিক থেকে চেষ্টা করব। তাদের পরিবারের প্রত্যাশা, সুষ্ঠু বিচার সুনিশ্চিত করতে পারি।