বিদেশী শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে বশেমুরবিপ্রবি
দেশের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিদেশী শিক্ষার্থীদের কাছেও খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন।
সর্বপ্রথম ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি সেল গঠন করা হয়। এসময় ৩০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম।
বিদেশী শিক্ষার্থীদের দায়িত্বে থাকা ইলেক্ট্রনিকস এন্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাতেমা খাতুন জানান, বর্তমানে বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তিতে বশেমুরবিপ্রবি প্রথম অবস্থানে রয়েছে। যার মধ্যে নেপাল, নাইজেরিয়া, সোমালিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রায় ২০৫ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে অধ্যয়ন করে আসছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য আমরা বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করি। বিদেশী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা তাদের শতভাগ আবাসনের ব্যবস্থা করেছি।
তিনি জানান, তাদের উৎসবের দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য উপহার সামগ্রী এবং বিভিন্ন আনন্দানুষ্ঠানের ব্যবস্থাও করে থাকি আমরা। সেই সাথে তারা কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে কিনা এসব ব্যাপারেও নজর রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিদেশী শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানতে চাইলে নেপালি শিক্ষার্থী পঙ্কজ কুমার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্বিত। এখানের মানুষগুলো অসাধারণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা খুব আন্তরিক। বিশেষ করে উপাচার্য স্যার আমাদের সার্বক্ষণিক খোজ খবর রাখেন। আমাদের সহপাঠীরাও অত্যন্ত আন্তরিক এবং সহযোগীতাপরায়ন। তারা অতি সহজেই আমাদের আপন করে নিয়েছে। তাদের এই ভালোবাসা নিজের দেশ থেকে এতদূরে থাকার কষ্টটা অনেকাংশেই কমিয়ে দিয়েছে।
বিদেশী শিক্ষার্থীদের পেয়ে খুশি স্থানীয় শিক্ষার্থীরাও খুশি। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সৈকত জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। বিদেশী শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় যেমন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করছে তেমনি আমরাও তাদের সম্পর্কে, তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছি।
সহপাঠী ও শিক্ষকদের সহযোগিতা এবং নিজেদের প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিদেশী শিক্ষার্থীরা সহজেই নিজেদের নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও রয়েছে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এসকল অনুষ্ঠানে তারা তাদের নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরছেন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছে রয়েছে ভবিষ্যতে আরো অধিক সংখ্যক বিদেশী শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ প্রদান করার।