শিক্ষক হতে এসে ছাত্রলীগের হাতে অপহৃত শিক্ষার্থীর ফের পরীক্ষা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষক হতে এসে ছাত্রলীগের হাতে অপহৃত হওয়া সেই শিক্ষার্থী পুনঃপরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পাচ্ছেন। অপহরণের পর গঠিত তদন্ত কমিটি আজ রোববার প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে ওই শিক্ষার্থীকে পুনরায় শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় অংশগ্রহনে সুপারিশ করা হয়। একইসাথে অপহরণের ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।
এর আগে গত ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিতে এসে ছাত্রলীগের একাংশের হাতে অপহৃত হন প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত সাবেক শিক্ষার্থী এমদাদুল হক। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় নিয়ে তাকে শারীরিক লাঞ্ছনার করার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন তিনি। একইসাথে উপাচার্য বরাবরও অভিযোগ পত্র জমা দেন তিনি।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে ৩ এপ্রিল তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন চবি প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিনকে প্রধান এবং সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান ও লিটন মিত্রকে সদস্য করা হয়।
দীর্ঘ একমাস পর রোববার দুপুরে চবির প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। এসময় তিনি সাংবাদিকদের তদন্ত প্রতিবেদন পাঠ করে শোনান।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘২৭ মার্চ পরীক্ষা দিতে এসে প্রার্থী এমদাদুল হক কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় ৩ এপ্রিল উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। সেদিনই ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনা পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এমদাদ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এলে কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। অভিযোগে ঘটনার সাথে জড়িত যে সাতজনের নাম উল্লেখ করেছেন তাদের মধ্যে তিনজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।’ তিন ছাত্রলীগ কর্মী হলো - প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মোকসেদ আলী, আনোয়ার হোসেন ও আসিফ মাহমুদ।'
এ ঘটনায় চবি প্রশাসনের নিকট তিনটি সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি— মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণে বাধা প্রদানকারী তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে; ২৭ মার্চ অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষাটি বাতিল করা যেতে পারে; প্রভাষক পদে প্রার্থী এমদাদুল হকের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণ করা যেতে পারে।
এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান ও সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দীন বলেন, ‘তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রক্টরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে আদালতের মাধ্যমে প্রার্থীকে চিঠি দিয়েছি যে, আপনার অভিযোগ তদন্ত করে দেখা যাচ্ছে আপনাকে অংশগ্রহণে বাধা প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং আমরা পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। উক্ত পরীক্ষায় আপনাকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।’