৩০ এপ্রিল ২০১৯, ২০:৩০

ছাত্র ইউনিয়ন নেতা-কর্মীদের ছাত্রলীগ পরিচয়ে মারধর

বাঁ থেকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী শোভন, আবিদ ও মেনন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর হামলায় আহত হয়েছেন বরিশাল জেলা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা বিএম কলেজের শিক্ষার্থী জগদ্বীশ সাহা, কিশোর কুমার বালা ও এক নারী কর্মী। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমুল্লাহ মেডিকেল করেছে ভর্তি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নৌ-থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার আনুমানিক রাত ৮টায় বরিশাল গামী লঞ্চ সুরভী-৮ এ ছাত্র ইউনিয়নের নারী কর্মীর সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তার সাথে খারাপ আচরণ করে ওই ছাত্রলীগ কর্মীরা। এতে জড়িত ছিল পরিসংখ্যান ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেনুন মাহফুজ, মনোবিজ্ঞান বিভাগ ১১তম ব্যাচের আবিদ আল হাসান এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১১তম ব্যাচের শাহারুল ইসলাস শোভন। এতে বাধা দিতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন সাথে থাকা ছাত্র ইউনিয়নের বাকী দুই কর্মী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শোভনের বান্ধাবী বরিশাল বিএম কলেজে পড়তো। সেখানে সে দেখা করতে গেলে শোভনের সাথে কথা কটাকাটি হয় জগদ্বীশ সাহার। এরই জের ধরে সোমবার ছাত্র ইউনিয়নের সম্মেলন থেকে ফেরার পথে সুরভী-৮ লঞ্চে মারধর করেন অভিযুক্তরা। এতে গুরুতর অবস্থায় জগদ্বীশ সাহাকে সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ভর্তি করায় নৌ থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম ভূইয়া বলেন, হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা শুনে আমরা সেখানে উপস্থিত হই। পরে তাকে উদ্ধার করে নৌ ফাঁড়ি পুলিশের সাথে কথা বলে ছেলেটিকে হাসপাতালে ভর্তির করা হয়েছে।

সামগ্রিক বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মিজান বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমরা মিটমাট করার চেষ্টা করেছি। মিনুন মাহফুজ নিজেকে জবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক পরিচয় দেন এবং আবিদ হাসান নিজে ওয়ারী ৩৯ নম্বর থানার ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দেন। এসব পরিচয় দেওয়ায় মিচুয়াল করে দেয়া হয়।

তবে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নল হক মঞ্জু বলেন, আমাদের ওয়ার্ডে আবিদ হাসান নামের কেউ ছাত্রলীগের দায়িত্বে নেই।

জানা যায়, জবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির আগে এরা সবাই সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলামের সাথে রাজনীতি করত। তবে এখন সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন রিশাদের সাথে রাজনীতি করে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে রিশাদ জানিয়েছেন, তারা আমার সাথে রাজনীতি করে না। এ বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিনুন মাহফুজ স্বীকার করে মিচুয়াল হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। তবে প্রতিবেদকে তিনি হুমকি দিয়ে দেখা করতে বলেন।

আরেক অভিযুক্ত শাহরুল ইসলাম শোভন বলেন, আমি এই ঘটনায় জড়িত ছিলাম না। ওখানে সোহান নামের একজন ছিল বলে শুনেছি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, গতকাল আমাদের বরিশাল জেলা সভাপতি জগদ্বীশ সাহার উপর পূর্ব শত্রুতার জেরে ঘটে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে হামলার এ ঘটনা। পরে নৌ পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্বার করি আমরা পরে মীমাংসা করি।

জবি সহকারী প্রক্টর মোস্তফা কামাল বলেন, এমন বিষয়ে মামলা করতে হবে। তাছাড়া অভিযোগ পেলে আমরা উপযুক্ত শাস্তি দিব। অনুসন্ধানে জানা যায়, অভিযুক্ত তিনজন বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকের উপর হামলা, বিভিন্ন মারামারিতে সরাসরি অস্ত্র উঁচিয়ে অংশ গ্রহন, পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলার সাথে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। এছাড়া ক্যাম্পাসে ছিনতাই, মারমারিসহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ডেও জড়িত ছিলেন।