২৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৬:২৮

খুবিতে নিদির্ষ্ট সময়ে ডিগ্রি অর্জনে ব্যর্থ শিক্ষার্থীরা সনদ পাবেন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর স্বাস্থ্যগত বা অন্যকোনো যৌক্তিক কারণে নির্দিষ্ট কোর্স মেয়াদে অভীষ্ট ক্রেডিট অর্জন করে সিজিপিএ হিসেবে অনার্স ডিগ্রি লাভ করতে পারছে না; তারা যদি নুন্যতম শতকরা ৯০ভাগ ক্রেডিট অর্জন করতে পারে তবে তাদেরকে শুধু ডিগ্রি পাস সনদ দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রবিবার রেজিস্ট্রার অফিস থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

জানা যায়, ভর্তির পর স্বাস্থ্যগত এবং অন্যান্য কিছু কারণে অনেক শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট শিক্ষামেয়াদে নির্দিষ্ট সর্বনিম্ন ক্রেডিট অর্জনে ব্যর্থ হয়। ফলে তাদেরকে খালি হাতেই বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করতে হয় এবং পরবর্তী জীবনে তাদের ভর্তির যেমন সুযোগ থাকে না, তেমনি বিনা সনদে কোনো কর্মসংস্থানও সহজে হয় না। শিক্ষার্থীদের এরূপ অবস্থায় অভিভাবকসহ পুরো পরিবার হতাশায় নিমজ্জিত হয়। বিষয়টি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান একাডেমিক কাউন্সিলের গত ৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ১৬৩তম সভায় উপস্থাপন করলে কাউন্সিল মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্তত শতকরা ৯০ভাগ ক্রেডিট অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রি পাস সনদ দেওয়ার ব্যাপারে নিয়মানুয়ায়ী সিন্ডিকেট সভায় সুপারিশ করে।

এই প্রেক্ষিতে গত ১২ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৯৯তম সভায় একাডেমিক কাউন্সিলের ওই সুপারিশ সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। বিষয়টি সিন্ডিকেট সভার তারিখ গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে খুবির শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হওয়ার দীর্ঘপ্রায় তিন দশক পর এ ধরনের মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এর ফলে পাস সনদধারী শিক্ষার্থীরা যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কিছু করার সুযোগ পাবে। সিন্ডিকেট সভার সভাপতি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এ ব্যাপারে বলেন খুব অল্প ক্রেডিট অর্জনের অভাবে ৭-৮বছর লেখাপড়া করেও অনেক শিক্ষার্থী যখন খালি হাতে বিদায় হয় তখন তার এবং অভিভাবকের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ার অনেক দৃশ্যই আমাদের দেখতে হয়।

এ ধরনের ঘটনায় অনেক পদস্থ ব্যক্তিরা ওই শিক্ষার্থীর মানবিক দিক বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করে থাকেন। এমনকি অনেক শিক্ষার্থী পাওয়া যায় যারা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা অনেকে আর্থিকভাবে খুবই অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় বা শিক্ষা অধ্যাদেশে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত না থাকায় এ পর্যন্ত এ ধরনের কোনো মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন আমাদেরকে সবক্ষেত্রে বাস্তবতাকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।

ভর্তি হওয়ার পর এখানে শিক্ষাকার্যক্রমের প্রতিটিদিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রতিপালনের মাধ্যমে অভীষ্ট ক্রেডিট অর্জন করতে পারলেই সিজিপিএ অনুয়ায়ী অনার্স ডিগ্রি দেওয়া হয়। যদিও এখানে একমাত্র স্থাপত্য ডিসিপ্লিনে নির্দিষ্ট কোর্স ৮বছরের মধ্যে শেষ করতে হয়। তবে সেখানে ২০০ক্রেডিট অর্জন করতে হয়। অন্যান্য স্কুলে এই ক্রেডিট ১৬০-১৩৬ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং শিক্ষাকোর্সের সময়সীমা ৭বছর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আলোকে বিজ্ঞপ্তি জারির কথা জানিয়েছেন এবং শিক্ষার্থীসহ সবার মধ্যে অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পড়েছে বলে উল্লেখ করেন। উল্লেখ্য, বিশ্বের অনেক উন্নত ও প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের সনদপত্র দেওয়ার বিধান চালু রয়েছে।