সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি মানার আশ্বাস ঢাবি প্রক্টরের
৫ দফা দাবিতে আজও নীলক্ষেত মোড়ে সড়ক অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী সেখানে গিয়ে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি আন্দোলনকারীরা।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মানববন্ধন থেকে নীলক্ষেত মোড়ে সড়কে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের অন্যতম সমন্বয়ক অমলেন্দু পাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘প্রক্টর স্যার এসে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কিছুদিনের মধ্যেই সাত কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটি দ্রুত করারও আশ্বাস দিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আন্দোলনের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে কিছুদিন হয়ত অপেক্ষা করা হবে।’
এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আজ বেলা ৩টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করার কথা জানান। একই দাবিতে ঢাকা কলেজের সামনে আমরণ অনশন করছেন তিন শিক্ষার্থী।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ফের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে সড়ক অবরোধ সমাপ্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীরা বুধবার বেলা ১১টায় পুনরায় তাদের ৫ দফা দাবি আদায়ে নিলক্ষেত মোড়ে অবস্থান করবেন বলে জানান।
তারও আগে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পাঁচ দফা দাবিতে এ আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
তাদের অভিযোগ, সময়মত পরীক্ষা না নেওয়া, রেজাল্ট প্রকাশে সাত থেকে আট মাস বিলম্ব, বিনা নোটিশে নতুন নিয়ম কার্যকর, একই বিষয়ে গণহারে ফেল, খাতার সঠিক মূল্যায়ন না হওয়া, সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্নপদ্ধতিসহ নানা সমস্যা রয়ে গেছে। এসব সমস্যা কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও সমাধান হয়নি।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ত্রুটি মুক্ত ফলাফল প্রকাশসহ একটি বর্ষের সকল বিভাগের ফলাফল একত্রে প্রকাশ করতে হবে। তারা উল্লেখ করেছেন- ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ২০১৬ সালের অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল ২০১৮ সালে প্রকাশিত হলেও সব বর্ষে পাশ থাকা সত্ত্বেও এখনো অনেকের সিজিপিএ আসেনি। তাই দ্রুত সিজিপিএ সমন্বয় করতে হবে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২০১৭ সালের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই শেষ হলেও এখনো সকল বিভাগের ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।
২. ডিগ্রী, অনার্স, মাস্টার্স সকল বর্ষের ফলাফল গণহারে অকৃতকার্য হওয়ার কারণ প্রকাশসহ খাতার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন- যেমন ইডেনের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ইংরেজি বিভাগের ৩০০ জন শিক্ষার্থী প্রথমবর্ষে শুধু বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে ফেল করার পুনরায় সবার খাতা নিরীক্ষনের আবেদন করেন। পরবর্তীতে প্রকাশিত ফলাফলে ৩/৪ জন ছাড়া সবাই পাশ করে।
৩. সাত কলেজ পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন চাই। তাদের মতে, স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ভবন না থাকায় সাত কলেজের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে। যেমন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ২০১৬ সালের মাস্টার্স এবং ডিগ্রি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২০১৭ সালের পরীক্ষা ২০১৯ সালে এসেও এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি।
৪. প্রতিমাসে প্রত্যেকটা বিভাগে প্রতি কলেজে দুইদিন করে মোট ১৪ দিন ঢাবির শিক্ষকদের ক্লাস নিতে হবে। তাদের মতে- এটা যদি ঢাবির পক্ষে সম্ভব না হয়, তাহলে সাত কলেজের প্রশ্ন প্রণয়ন এবং খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব অবশ্যই সাত কলেজের শিক্ষকদের দিতে হবে।
৫. সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে একাডেমিক ক্যালেণ্ডার প্রকাশসহ ক্রাশ প্রোগ্রাম চালু করা।