১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৮:০৩

উপাচার্যকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের স্মারকলিপি, অন্যদের প্রত্যাখান

উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ

নিয়োগশর্ত অনুযায়ী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করাসহ ১৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এই স্মারকলিপি দেন।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুর রহমানের কাছে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। কিন্তু স্মারকলিপিটি প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছেন সমিতির কার্যকরী সংসদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য।

আবেদনে তারা বলেন, সমিতির গঠনতন্ত্রের ৮ এর ‘ক’ ধারা অনুযায়ী কার্যকরী সংসদের পর তিনটি সভা আহবান করার কথা। তার পরেও সভা অনুষ্ঠিত না হলে সাধারণ সভা আহবান করতে হয়। কিন্তু সেটা না করে কার্যকরী সংসদের কোনো সদস্যের সঙ্গে পরামর্শ না করেই ৫ মার্চ ২০১৯ তারিখে সভা আহবান করেন সাধারণ সম্পাদক যা বৈধ হতে পারে না। এই সভায় কার্যকরী সদস্যদের উপস্থিতি ছাড়াই সমিতির সাধারণ সদস্যবৃন্দকে বিভ্রান্ত করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়। যার সাথে সমিতির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ একমত নয়।

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর সুমন বলেন, বিরোধিতার স্বার্থেই তারা এই কথা তুলেছেন। সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাধারণ সভা যেকোন ধরণের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সমিতির সভা ডেকে তাদেরকে আমন্ত্রণ জানালে তারা না এসে এখন বিরোধিতা করছেন।

শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ড. নুর আলম সিদ্দীক বলেন, শিক্ষক সমিতির সেদিনের মিটিং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হয়নি। সেহেতু সেখানে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নয়। কমিটির সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো কমিটির নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির ১১ জন সদস্য জানেন না।

তিনি আরও বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতে জানানো হয়েছে যে আজকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। তাই আমরা নির্বাহী কমিটির ১১ জন সদস্য স্মারকলিপিটি প্রত্যাখ্যান করেছি।

শিক্ষক সমিতির ব্যনারে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে তারা জানান, গত ৫ মার্চ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সমিতির সদস্যবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান বিভিন্ন সংকটের কথা উল্লেখ করে তা সমাধানের জন্য কিছু প্রস্তাবনা রাখেন। প্রস্তাবনাগুলো হলো- চ্যান্সেলর প্রদত্ত নিয়োগ শর্ত অনুযায়ী উপাচার্যকে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করা; বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজের কার্যক্রম বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সিন্ডিকেট, নিয়োগ বোর্ড, অর্থ কমিটির সভাসহ সকল সভা ক্যাম্পাসে আয়োজন করা; নতুন যোগদানকৃত শিক্ষকবৃন্দের অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেনিং বন্ধ করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক সংকট লাঘব করা; শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নিয়োগ বোর্ডের সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করা; সিএসই,পরিসংখ্যান এবং রসায়ন বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত আপগ্রেডেশন/প্রমোশনের যোগ্যতা অর্জনকারী শিক্ষকবৃন্দের আপগ্রেডেশন/প্রমোশন দিতে হয়রানি না করা; অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ইউজিসি থেকে জরুরী ভিত্তিতে শিক্ষক পদ অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ী পদে চাকরিরত শিক্ষকবৃন্দের চাকরি স্থায়ীকরণ; উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণারত শিক্ষকদের শিক্ষাছুটি ৭ বছর নির্ধারণ করে অতিদ্রুত শিক্ষাছুটি নীতিমালা প্রণয়ণ; এনওসি ও অভিজ্ঞতা সনদসহ যাবতীয় জরুরী বিষয়াদির প্রক্রিয়া ২/৩ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করা; সকল পরীক্ষার পারিতোষিক ফলাফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেজারার ও প্রো-ভিসি নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম ফলপ্রসু করতে অনুষদে উপস্থিত যোগ্য শিক্ষককে ডিন ও বিভাগে উপস্থিত যোগ্য শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেট অনুযায়ী বিভাগের একাডেমিক প্লানিং কমিটি গঠন করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সম্প্রসারণ; সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্য উপাসানালয় স্থাপন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে যথাযথ মর্যাদায় নিয়োগ প্রদান; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতি স্থাপন এবং ক্যাম্পাসে ব্যাংকের স্থায়ী শাখা স্থাপন।