১০ আগস্ট ২০২৫, ১৯:২৯

সরকারি মৎস্য বীজ খামার দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ ঘোষণা খুবি শিক্ষার্থীদের

‘খুলনা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার’ দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ নামে আবাসিক হলের ঘোষণা  © সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সীমানার মধ্যে থাকা ‘খুলনা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার’ দখল করে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ নামে আবাসিক হলের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের দাবি আদায়ের অংশ হিসেবে আজ রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে খামার কার্যালয়ের নামফলকের ওপর নতুন ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের সামনে যান। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যেতে বলেন। কর্মকর্তারা বের হয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা মূল ভবনের সামনে ‘শহীদ মীর মুগ্ধ হল’ লেখা ব্যানার টাঙিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে বেলা ২টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার ভেতরে থাকা ১০ দশমিক ৩৫ একর আয়তনের খামারটি মৎস্য অধিদপ্তরের আওতাধীন। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনসংকট নিরসন, গবেষণাগার সম্প্রসারণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে খামারটি বাধা হয়ে আছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসংখ্যা সাত হাজারের বেশি হলেও হল আছে মাত্র পাঁচটি। এতে মাত্র ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত হয়। জীববিজ্ঞানভিত্তিক ডিসিপ্লিনগুলোর মাঠ গবেষণার ক্ষেত্রেও জমির অভাব তীব্র সমস্যা তৈরি করেছে।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মৎস্য অধিদপ্তরের জমিতে ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা ব্যানার টাঙিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। ২০২৪ সালের ৬ নভেম্বরেও একই দাবিতে ক্যাম্পাসে সমাবেশ করে সাত দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। ওই মাসেই মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিবের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মৎস্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় জমি হস্তান্তরের অনুরোধ জানিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার খুলনায় এসে বিষয়টিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণের জন্য ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব-সংবলিত প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ও আছে। আজকের ঘটনাটি এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়ার অংশ নয়। দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা হয়তো সেখানে গেছেন।