অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি ছাত্রদল নেতার
রংপুরের মিঠাপুকুরে বেগম রোকেয়া স্মৃতি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহেদুল আলমকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান।
জানা গেছে, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মো. মাহফুজ উল আলম মীম কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। ছাত্রত্ব না থাকার পরেও রংপুর নগরীর পার্ক মোড় এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় প্রভাব দেখিয়ে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বনে যান। এরপরেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন বলে অভিযোগ উঠে।
এর আগে গত ১৭ জুলাই কারমাইকেল কলেজে শিক্ষক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে মাসিক মিটিংয়ে সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আমজাদ হোসেনের দুর্নীতির বিষয় নিয়ে কথা চলছিল। এ সময় উচ্চ বাক্য হওয়ার জেরে অধ্যক্ষের টেবিল চাপড়িয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে সমালোচনার শিকার হন ছাত্রদলের এই নেতা। এ সংক্রান্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে সিনিয়র শিক্ষক রাজ্জাকুর রহমান, রেজাউল করিম, মাকসুদুর রহমান, আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বুধবার জেলা শিক্ষা অফিস প্রাঙ্গণে তদন্ত চলছিল।
এ সময় রাজ্জাকুর রহমানের নির্দেশে তার ছেলে রাতুলসহ ছাত্রদল নেতা মো. মাহফুজ উল আলম মীমের নেতৃত্বে মামুন, রাসেল ও অজ্ঞাত বহিরাগতদের নিয়ে আমার ওপর হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং মারধরের জন্য উদ্যত হয়। উপস্থিত লোকজনের হস্তক্ষেপে আমি রক্ষা পাই।’
তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তরা আমাকে রংপুর শহরে থাকতে দিবে না বলে হুমকি দেয় এবং বাহিরের লোকজন দিয়ে তুলে নিয়ে যাবে ও একা পেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এতে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী মাহফুজা খাতুন বলেন, ‘তারা দেড়মাস পূর্বের প্রতিষ্ঠানে আমার স্বামীকে অবরুদ্ধ করে রেখে ইউএনও অফিসে গিয়ে ছাত্রদল ও সমন্বয়ক পরিচয়ে আমার স্বামীকে সাময়িক বরখাস্ত করান। এখন আওয়ামী ট্যাগ দিয়ে আমার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
একদিকে বেআইনিভাবে বরখাস্ত করালো, অন্যদিকে তদন্তকালীন অফিসারদের চাপে রেখে তদন্ত রিপোর্ট পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্তের স্থানেও আমাদের আসতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, ন্যায়বিচার চাই।’
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘অধ্যক্ষ মাহেদুল আলম বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।