০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৭:২৩

জবি শিক্ষার্থীর ওপর ছিনতাইকারীর হামলা, পুলিশি তৎপরতায় গাফলতির অভিযোগ 

প্রতীকী ছবি  © টিডিসি ফটো

অস্ত্রধারী ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাইন ইসলাম পবন ও তার বড় ভাই তানজিদুল হক। আহত হলেও প্রাণ নিয়ে ফিরতে সক্ষম হন দুজনেই। তবে এ বিষয়ে পুলিশি তৎপরতার ঘাটতি এবং জিডিতে তথ্য বিকৃতির অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

গত শনিবার (২ আগস্ট) রাতে ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটে রাজধানীর দয়াগঞ্জ এলাকায়। 

জানা যায়, জবি শিক্ষার্থী পবনের বড় ভাই বরিশাল থেকে ঢাকা আসছিলেন। ঢাকায় ভাইকে ধোলাইপাড় থেকে রিসিভ করে রিকশায় ফেরার পথে দয়াগঞ্জ ইবনে সিনার সামনে ৭ থেকে ৯ জন অস্ত্রধারী তাদের রিকশা থামিয়ে ছুরি, চাকু, সুইস গিয়ারসহ বিভিন্ন অস্ত্র দেখিয়ে পথরোধ করে এবং ভাইয়ের পায়ে আঘাত করে। এরপর ছিনতাইকারীরা পবনের বড় ভাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিদুল হকের পকেট থেকে একটি আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স, মানিব্যাগে থাকা ৬০০০ টাকা এবং পবনের একটি বাটন ফোন ও মানিব্যাগে থাকা ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

পবনের ভাষ্যমতে, ছিনতাইয়ের পরপরই তারা গেন্ডারিয়া থানার পাশে তিন রাস্তার মোড়ে একটি টহল পুলিশ টিমের দেখা পান। কিন্তু পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থল তাদের থানা এলাকার বাইরে, তাই যাত্রাবাড়ি থানায় অভিযোগ করতে হবে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, যাত্রাবাড়ি থানায় গিয়ে সব কিছু বিস্তারিত বললেও জিডিতে ছিনতাইয়ের কোনো উল্লেখ না করে বিষয়টিকে ফোন হারানোর মতো দেখানো হয়েছে। এতে ঘটনাটির প্রকৃত রূপ চাপা পড়ে গেছে এবং ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও দাবি করেন পবন ও তার বড় ভাই তানজিদুল হক।

এ বিষয়ে তানজিদুল হক বলেন, ‘ডায়েরিতে ছিনতাইয়ের স্পষ্ট উল্লেখ না করে পুলিশের এভাবে দায় এড়ানো আসলে ভয়ংকর। তাদের এমন আচরণে মনে হচ্ছে ছিনতাইকারীরা বারবার অপরাধ করেও রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। এই এলাকাটিকে তো পুলিশই ছিনতাইয়ের “হটস্পট” বলে স্বীকার করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বেঁচে ফিরেছি এটা শুধুই আল্লাহর সহায়তায়। ছিনতাইকারীরা ছিল নেশাগ্রস্ত। ওরা চাইলে তখনই আমাদের মেরে ফেলতে পারত। এই ব্রিজ এলাকায় এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে। যেকোনো দিন কোনো শিক্ষার্থী প্রাণ হারাতে পারে। আর তখন প্রশাসনের টনক নড়বে?’

পাবলিক স্পট অথচ নিরাপত্তাহীন দয়াগঞ্জ ইবনে সিনার ব্রিজ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীদের।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের রুটে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারা পুলিশের চরম ব্যর্থতা।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ি থানার এসআই মো. কামরুজ্জামান তালুকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জিডিতে প্রকৃত ঘটনার উল্লেখ না করা এবং দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যান। 

এ ছাড়াও দয়াগঞ্জ মোড় যে ছিনতাইকারীদের একটি হটস্পটে পরিণত হয়েছে তা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমরা যথাসম্ভব দ্রুত ভুক্তভোগীর হারানো জিনিসগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং এসব ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে আরও সচেতন ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করব। এ ছাড়াও আমরা ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অপরাধীদের খোঁজ এবং মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে কোনো আপডেট থাকলে আমরা ভুক্তভোগীদের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করব।’