মাইয়াটারে ধর শালা, চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে বাঁচলো বর্ষা

 বর্ষা চৌধুরী
বর্ষা চৌধুরী  © সংগৃহীত

এবার পাবলিক বাসে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বর্ষা চৌধুরী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নগরীর নিউমার্কেটে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলেন। নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় পৌঁছালে সকল যাত্রী নেমে পড়ায় বাসটি যাত্রী শূন্য হয়ে যায়। বর্ষাকে বাসে একা পেয়ে তাৎক্ষণিক রাস্তা বদল করে স্টেশন রোডের দিকে চালাতে শুরু করে ড্রাইভার। কিছু না বুঝে ভয়ে নিজকে বাঁচাতে চলন্ত বাস থেকে লাফ দেয় বর্ষা। বাসের ড্রাইভার তখন হেল্পারের উদ্দেশ্যে বলছিলো ‘মাইয়াটারে ধর শালা’। এদিকে ততক্ষণে বর্ষা বাস থেকে নিচে পড়ে যায়।

প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনার আড়ালে ঢাকা পড়ছে পুরাতন সব ঘটনা। নতুন ঘটনাকে ঘিরেই সকলের ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। আবার একটা বড় ঘটনার আড়ালেও অনেক ছোট ঘটনা ঢাকা পড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দুদিন আগের নুসরাতের এমন নির্মম ঘটনার সমাপ্তি ঘটতে না ঘটতেই বর্ষার সাথে ঘটে যাওয়া বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না তার সহপাঠীরা। তবে ঘটতে পারতো আরও মর্মান্তিক কোনো দুর্ঘটনা। আবারও পুরো জাতির হয়তো নজর ঘুরে যেত এই ঘটনার দিকে।

এদিকে বর্ষার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিকট এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, ১১ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে বিভাগের নির্দিষ্ট ক্লাস শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেট এলাকা থেকে নগরীর নিউমার্কেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ৩নং রুটের একটি বাসে উঠেছিলো বান্ধবীর সঙ্গে। নগরীর জিইসি মোড়ে এসে বান্ধবী বাস থেকে নেমে যায়। বর্ষা নিউমার্কেট যাবে। তাই বাসেই ছিলো সে। বর্ষা ছাড়া বাকি যাত্রী নেমে যাওয়ায় বাসটি যাত্রী শূণ্য হয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় ভূক্তভোগী বর্ষা জানায়, তারা বাসে একা পেয়ে আমাকে তাৎক্ষণিক রাস্তা বদল করে স্টেশন রোডের দিকে চলতে শুরু করে। কিছু একটা ভেবে আমি নিরাপত্তার স্বার্থে বাস ড্রাইভারকে বাস থামানোর জন্য বলতে না বলতেই বাসের হেল্পার আমার দিকে ধেয়ে আসে। সে আমাকে গলায় থাকা ওড়না দিয়েই পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করতে থাকে। তখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। কিন্তু নিজেকে বাঁচানোর প্রাণপণ চেষ্টা করছিলা। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে হেল্পারকে আঘাত করি। আঘাতটা সম্ভবত চোখে লাগায় সে পেঁচিয়ে ধরে রাখা ওড়নাটা ছেড়ে দেয়।

এ বিষয়ে চবি প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। আমরা বর্ষার বাবার সঙ্গেও কথা বলেছি। পাশাপাশি আমাদের উপাচার্য স্যারও এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তারা খুব দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত করার আশ্বাস প্রদান করেছে। আশাকরি খুব সহসা অপরাধীদের সনাক্ত করা সম্ভব হবে।


সর্বশেষ সংবাদ