কাফনের কাপড় পরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ববি শিক্ষার্থীদের
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হকের পদত্যাগ চেয়ে মুখে কাফনের কাপড় বেঁধে অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ শুরু করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার কলাবাগান লিয়াজো অফিসে এক জরুরী সিন্ডিকেট সভায় কোন সিদ্ধান্ত না আসায় আজ তারা এ কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন।
সভায় শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল এই সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্যকে পদত্যাগ করার জন্য বাধ্য করা হবে। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় শেষে এ ধরণের কোন ফলাফল দেখতে না পেয়ে গভীর রাতে তিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসেন। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় আজ বুধবার সকাল ১১টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি গ্রহণ করবেন।
যতক্ষণ উপাচার্য পদত্যাগ না করছেন, ততক্ষণ রাজপথ ছাড়বেন না বলে তারা জানিয়েছেন। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টা থেকে ঢাকা-পটুয়াখালি মহাসড়ক অবরোধ করেন। বৈরি আবহাওয়া, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মহাসড়কে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা।
এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। বরিশালের সাথে পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসময় শিক্ষার্থীরা জরুরী পরিবহন বিশেষত অ্যাম্বুলেন্স, বিভিন্ন এনজিও, ওষুধের গাড়িগুলো যেতে দিচ্ছেন।
এর আগে সকাল ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন। উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন বলেন, ‘আজ ১৬ দিন ধরে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছি। কার্যত অচল রয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা দু’বার উপাচার্যকে আন্টিমেটাম দিয়েছি। দু:খের বিষয় তিনি আমাদের কথা আমলেই নিচ্ছেন না।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল সিন্ডিকেট সভায় আমরা আশা করেছিলাম উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। তাই আমরা আজ কাফনের কাপড় মুখে বেঁধে অনির্দিষ্টকালের কালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না। উপাচার্য স্যার ববিতে থাকবেন, না হয় আমরা থাকবো।
গত ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে উপাচার্যে চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে বিইউডিএস এর এক অনুষ্ঠানে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ বললে আন্দোলন বেগবান হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যমান অচলাবস্থা নিরসনে গত শনিবার বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও তা ভেস্তে যায়। উপাচার্যকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর আশ্বস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা তা লিখিত চেয়ে আন্দোলনে অনড় রয়েছেন।