রেজাল্টের প্রলোভনে বশেমুরবিপ্রবি’র দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি!

অভিযোগ সিএসই চেয়ারম্যান ইঞ্জি. মো. আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে
অভিযোগ সিএসই চেয়ারম্যান ইঞ্জি. মো. আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর পাশাপাশি যৌন হয়রানির শিকার ওই দুই ছাত্রী নিজ অভিভাবকদেরকে সঙ্গে নিয়েও বিভাগীয় শিক্ষকদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ইঞ্জি. মো. আক্কাছ আলী নম্বর বেশি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদেরকে যৌন হয়রানি করেন বলে জানিয়েছেন ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ওই দুই ছাত্রী।

ওই দুই ছাত্রীর সাত ও ছয় পেজের দুটি লিখিত অভিযোগ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র হাতে এসেছে। এছাড়া ভূক্তভোগী দুই ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং বিভাগের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেও এর সত্যতা মিলেছে। ছাত্রীদ্বয় জানিয়েছেন, তারা এর বিচার চান। ভবিষ্যতে আর কোন ছাত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ যাতে না করা হয়, সে নিশ্চয়তাও চেয়েছেন তারা। তবে একমাসের অধিক সময় পার হলেও এ ব্যাপারে শাস্তিমূলক তেমন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ জানানোর পর ওই ছাত্রীকে ফোন দিয়ে তার বকঝকা করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।  ব্যাপারটি নিয়ে কথা বলতে বাসায় যাওয়ার জন্যও বলেছেন তিনি। এর কোন প্রমাণ আছে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন ওই শিক্ষক। এ সময় ওই ছাত্রী বাসায় না গিয়ে অফিসে দেখা করতে চেয়েছেন। তবে তিনি বিভাগে যাননি বলেও জানান ওই ছাত্রী। এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে অনেকেই স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিভাগের পদ নিয়ে দ্বন্দের কারণে এমনটি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক।

লিখিত অভিযোগে ভূক্তভোগী দুই ছাত্রী জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী তাদের থিসিস প্রোজেক্টের সুপারভাইজার হন বিভাগের শিক্ষক মাইনুল হাসান। তবে তিনি অন্যত্র চাকরি নিয়ে চলে যাওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ আক্কাস আলীর থিসিসের সুপারভাইজার হন। তার দু‘জনসহ তিনজন গ্রুপ করে থিসিসের বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করেন।

গবেষণার সুবিধার্থে তারা বিভাগীয় অফিস ছাড়াও নীলার মাঠে তার নির্মানাধীন বাসায় তারা গিয়ে দেখা করতেন। এ সময়গুলোতে তিনি গবেষণা ছাড়াও ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে আলোচনা করতেন এবং অপ্রীতিকর ব্যক্তিগত প্রশ্নে তারা বিব্রত হতেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ডিসেম্বর থিসিস ডিফেন্সের নির্ধারিত দিন কোড, রিপোর্টসহ পরীক্ষা দিতে গেলে তিনি জানান, তারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। এসময় জাতীয় নির্বাচনের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তারা বাড়িতে বসেই কাজ করতে থাকেন।

অভিযোগে তারা আরও জানান, ছুটি শেষে তারা প্রতিদিনই একাধিকবার তার সঙ্গে দেখা করতে হত। পরে গত ২৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষকের পছন্দমত থিসিসের কাজ শেষ করে তার কাছে গেলেও তিনি সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এরমধ্যে দুজন আগে চলে গেলে এক ছাত্রীকে শুক্রবার একা দেখা করতে বলেন। এতে দুশ্চিন্তায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ছাত্রী তার অভিযোগেও এটি উল্লেখ করেছেন। ওইদিন তাকে সারারাত তাকে হাসপাতালে কাটাতে হয়। ২৫ জানুয়ারি তাকে অনুমতি নিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে অন্তত একজনকে রিপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের জন্য থাকতে বলেন আক্কাস আলী।

ওইদিন দুপুর তিনটায় তার আদেশমত এক ছাত্রী বিভাগে গিয়ে তালাবদ্ধ পান। এসময় স্যারকে ফোন দিলে তিনি বিভাগের ভেতর থেকে এসে তালা খুলে দেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর দীর্ঘ এক ঘন্টা রিপোর্ট দেখেন এবং ছোটখাট কিছু অ্যালগরিদম নিয়ে প্রশ্ন করেন। কিছু ভুল খাতায় লিখে নেন তিনি। রিপোর্ট দেখা শেষ হলে তিনি ব্যাগ গুছিয়ে বের হতে উদ্যত হলে ওই শিক্ষক তার কাছে আসার চেষ্টা করেন। এসময় ওই ছাত্রী তাকে সাবধান করে বলেন, স্যার আপনি কি বুঝতে পারছেন, আপনি কি করছেন। তখন তিনি কাকুকি করতে থাকেন এবং বিভিন্ন অপ্রীতিকর কথা বলতে থাকেন। এসময় তার ভাষা প্রকাশ করা লজ্জাজনক বলেও উল্লেখ করেছেন ওই ছাত্রী।

অভিযোগে তিনি বলেছেন, এসময় ওই শিক্ষক ‘আমাকে শুধু ধরতে দাও’ এরকম বিভিন্ন বাজে প্রস্তাব করতে থাকে এবং জোর করতে থাকেন। এসময় জোর করে ব্যাগ নিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ওই শিক্ষক বলেন, ‘তুমি যাবে কীভাবে? বাইরের গেটে তো তালা দেওয়া।’ এ সময় ওই ছাত্রী ভয় পেয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে শিক্ষক তাকে রেজাল্টের প্রলোভন দেখাতে থাকেন। তবে ছাত্রীটি জবাবে বলেন, ‘রেজাল্ট, সার্টিফিকেট কিছু লাগবে না, শুধু আমাকে এখান থেকে যেতে দেন। আপনি আমার শিক্ষক, আপনার ছোট একটা বাচ্চা আছে, আল্লাহকে মানেন। আল্লাহকে মানেন।’

ওই ছাত্রী অভিযোগে জানান, এভাবে ১৫-২০ মিনিট চেষ্টার পর তাকে রাজি করাতে না পেরে ওই শিক্ষক তাকে বলেন, ‘ঠিক আছে আমি তালা খুলে দিচ্ছি। স্বাভাবিক হও, কান্না থামাও। আমি তালা খুলে দিয়ে আসব, তারপর তুমি বের হবা। ঐ মুহুর্তে ছাত্রীটি স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন এবং সেখান থেকে বের হয়ে যান।’ পরে ৩০ জানুয়ারি গোপালগঞ্জে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আবার সেখান থেকে চলে যান। এখনও তারা পরীক্ষার রেজাল্ট পাননি এবং এ নিয়ে শঙ্কিত। এছাড়া ওই শিক্ষক অভিযোগকারী ছাত্রীকে ফোন দিয়েছেন এবং সামনা-সামনি দেখা করতে বলেছেন। তবে সে সাহস এখন তার নেই বলেও জানিয়েছেন ওই ছাত্রী।

অভিযোগে থিসিসের বাহানায় শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন শারীরিক ও মানসিক হয়রানির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এরুপ অনাকাঙ্খিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহবান জানিয়েছেন ভূক্তভোগী দুই ছাত্রী।

ভূক্তভোগী অভিযোগকারী এক ছাত্রী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এই অভিযোগটা আমরা বিভাগের শিক্ষকদেরকে দিয়েছি এবং তাদেরকে বিস্তারিত জানিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে জানাতে অভিভাবকসহ ভিসির সঙ্গে দেখা করারও চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি সময় দেননি। এছাড়া ইটিই বিভাগের ফাতেমা নামের একজন শিক্ষিকা এ ব্যাপারে কাজ করছিলেন।’

তিনি আরও জানান, ‘প্রক্টরের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমরা কোন কথা বলিনি। তবে বিভাগের শিক্ষকরা তার সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। এছাড়া শিক্ষকেরা এ ব্যাপারে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে ইটিই বিভাগের শিক্ষক ফাতেমা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস বলেন, ‘আমি তাদের কাছ থেকে ব্যাপারটি পুরোপুরি শুনতে পারিনি। এছাড়া পরে ব্যস্ততার কারণে এ ব্যাপারে আর কোন খোঁজও নিইনি। তবে এর একটা সমাধান হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’ এছাড়া তিনি এখন ছুটিতে আছেন বলেও জানান।

ওই দুই ছাত্রীর অভিযোগের ব্যাপারে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ইঞ্জি. মো. আক্কাছ আলী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। ওই তিন ছাত্রীসহ আরও অনেকেই থিসিসের জন্য একসাথে বসতেন। এছাড়া শুক্রবার দু‘জন ছাত্রী ছিলেন। এক ছাত্রী অসুস্থ হওয়ায় বাড়ি চলে যান।’ তিনি বলেন, ‘বিভাগের একজন অ্যাসিস্টেট প্রোফেসর এগুলো ঘটাচ্ছেন। তিনি আমার চেয়ারম্যান হওয়াটা মেনে নিতে পারেননি। এছাড়া ওই দুই ছাত্রীর বিরুদ্ধেও বিচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। ওই শিক্ষকের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক।’ এ কারণে এ অভিযোগ নিয়ে আসা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এরকম লিখিত অভিযোগ তারা করেননি। প্রক্টর অফিসে তারা আসেনি। তারা না আসলে ব্যবস্থা কীভাবে নেব। ওই ছাত্রী আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে দু‘জন নয়, একজন ছাত্রীর অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এরপর তাকে পরীক্ষা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ছুটির দিনগুলোতে কোন ছাত্রীকে নিয়ে বসতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রক্টরসহ তাকে নিয়ে বসে এ ব্যাপারে তাকে কড়াভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই দুই ছাত্রী মাস্টার্স শেষ করে চলে গেছে।’ এখন এভাবে অভিযোগ করছে বলেও জানান তিনি।

ভাইরাল ফেসবুক স্ট্যাটাস

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ঘটনা নিয়ে অজ্ঞাত এক ফেসবুক আইডি থেকে থেকে একটি স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে। ‘রক্ষক যখন ভক্ষক’ শিরোনানে লেখা ওই স্ট্যাটাসটি হুবহুল তুলে ধরা হলো-

‘কখনো ভাবতেও পারিনি আমার হাত দিয়ে আমাকে এমন সব কথা লিখতে হবে। আমরা সবাই জানি, শিক্ষক হল পিতা মাতা তুল্য । বাবা মা অনেক আশা নিয়ে তাদের ছেলে মেয়েদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠায়। তারা মনে করে তাদের ছেলে মেয়েদের জন্য শিক্ষকরাতো আছেন-ই। কিন্তু যাদের কে রক্ষক ভেবে বাবা মা অনেক আশা নিয়ে তাদের ছেলে মেয়েদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠায় সেই রক্ষক-ই যখন ভক্ষক হয় তখন আসলে মরে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না ।

এতদিন শুধু এইসব ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় পড়েছি, শুনেছি । আর আজকে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা দেখছি , আর শঙ্কিত হয়ে যাচ্ছি যে আর কত দিন নিজেকে এইসব রক্ষক নামের ভক্ষকদের হাত থেকে বেঁচে থাকতে পারব! প্রশ্ন জাগছে তাই না ? কেন এসব কথা বলছি ? তাহলে শুনুন-

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সুনামধারী একটি ডিপার্টমেন্ট ‘কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং- (সিএসই)’ যেই ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রতি বছর এক ঝাঁক ইঞ্জিনিয়ার বের হয়। এই সুনামধারী ডিপার্টমেন্টে রক্ষক নামের একজন ভক্ষক আছে। বিভাগীয় প্রধান ‘ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আক্কাস আলী’ যার মাথায় টুপি, আর শরীরে সবসময় পাঞ্জাবি থাকে। শুনেছি নামাজ ও পড়ে পাঁচ ওয়াক্ত।

হ্যা, আমি বুঝেই শুনেই তাকে ভক্ষক বলছি কারণ, তিনি নিজের বিভাগের মেয়ের বয়েসি মেয়েদের সাথে লুতুপুতু আদর খেলা খেলতে চায়। মেয়েদেরকে ভয় দেখানো হয় তারপর তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে তাকে সত্যি সত্যি ফেল করিয়ে দেওয়া হয়, ঠিক এভাবেই ভয় দেখিয়ে ফেল করিয়ে মেয়েদেরকে তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন ধরে যাদের সাথে সুবিধা করে উঠতে পারছিলনা তাদের শেষ বর্ষে নিজের আন্ডারে থিসিস এবং প্রজেক্ট করাইতো, কিন্তু সে জানতো না কিছু মেয়ে থাকে যারা মরে যাবে তবু অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবে না,ঠিক তেমনি ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী রেবা (ছদ্মনাম), এবং শুকলা (ছদ্মনাম), আক্কাস আলী প্রথমে শুকলাকে টার্গেট করে বসে এবং সে তাকে ফোন দিয়ে ডাকতো, তাহলে এখানে প্রশ্ন থাকতে পারে ফোন রেকর্ড কোথায়!

হ্যাঁ, আক্কাস আলী আমাদের ভাবনার চেয়েও ধুরন্ধর যে শুধু প্রোজেক্ট বা থিসিস এর ব্যাপারে তার রুমে আসতে বলতেন এবং যখন তার রুমে যেত তখন তিনি নিজ হাতে ছাত্রীদের ফোনের সুইচ অফ করে দিতেন তারপর শুরু হতো আক্কাসের বিকৃত যৌন ক্ষুধার বহিঃপ্রকাশ, এমন মানসিক নির্যাতনের ফলে শুকলা ফাইনাল প্রেজেন্টেশনের কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং হসপিটালে ভর্তি হয় তারপর তার ফ্যামিলি তাকে নিয়ে বাসায় চলে যায়, কিন্তু এত কিছুর পরেও আক্কাস থেমে থাকেনি এরপর তার পরবর্তী টার্গেট হয় রেবা।

রেবাকেও ঠিক একইভাবে আক্কাস আলী একা একা দেখা করতে বলতেন কিন্তু রেবা বলতো এসব রাতের বেলা বা ছুটির দিনে সে কেন দেখা করবে এবং সে যেতেও না!

থিসিস, প্রোজেক্ট, আর রেজাল্টের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন কায়দায় শরীরে হাত দেয়ার চেষ্টা করে । ছুটির দিনে মেয়েদের কে একা নিজ বিভাগে ডেকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে । তার মুখের ভাষা "কিছু করব না ,প্লিজ শুধু আমাকে একটু ধরতে দাও" সে আসলে কি ধরতে চায়?

মেয়েটা যখন এই অবস্থা দেখে পালিয়ে যাবার চেষ্টাও করেছিল তখন এই রক্ষক নামের ভক্ষক বলে কিনা “কিভাবে যাবে মেইন দরজা তো বন্ধ করা অবস্থায় মেয়েটার শেষ আকুতি কি ছিল জানেন।

‘স্যার আমার কিছু লাগবে না, রেজাল্ট, সার্টিফিকেট কিচ্ছু লাগবে না, আপনি শুধু আমাকে এখান থেকে যেতে দেন, আপনি আমার শিক্ষক এগুলো করেন না স্যার প্লিজ! আমার সাথে এগুলো করে না, আপনার ছোট একটা বাচ্চা আছে আপনি আল্লাহকে মানেন এগুলো করে না স্যার!’
আজকে সিএসই বিভাগে এই ঘটনা ঘটেছে, কিছুদিন পর আমাদের সাথে ঘটবে, এর শেষ কোথায়? আমাদের বাবা মা কাদের ভরসায় তাদের ছেলে মেয়েদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাবেন? এই দেশে ইভটিজারদের বিচার হয়, ধর্ষকদের বিচার হয় কিন্তু এই সমস্ত রক্ষক নামের ভক্ষক দের কখনো বিচার হয় না। কারণ তাদেরকে সরকার নিয়োগ দিয়েছে। (আরেকটা কথা না বললেই নয়, স্যার কিন্তু সরকারি দলের রাজনীতি করেন।)

প্রসঙ্গত, এর আগে ফেসবুকে হৃদয় বিদারক স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেরই মেধাবী ছাত্র অর্ঘ বিশ্বাস (২০)। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার খুলনা কাকলীবাগ এলাকার তার ৫ তলার বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

অর্ঘের ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস থেকে জানা যায়, ক্লাসে উপস্থিত না থাকার কারণে প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি তাকে। আর এই কষ্টেই তিনি আত্মহত্যা করেন। এতে বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও ভিসির ওপর নিজের তীব্র অভিমানের কথা জানিয়েছিলেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ