১৯ মে ২০২৫, ১৪:৪০

ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে ইউজিসির সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ইউজিসির সামনে অবস্থান নিয়েছেন ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি

গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৯ মে) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের দাবি, গত ৫ আগস্ট সরকার কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন হওয়ার পর থেকেই তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরসহ একটি আবেদনপত্র ইউজিসি ও রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রশাসনের আশ্বাসের পরও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা অবস্থান কর্মসূচিতে নেমেছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য চারটি নাম প্রস্তাব করেছেন। এগুলো হলো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি। এর মধ্যে থেকে যেকোনো একটি নাম নির্ধারণ করার দাবি তাদের। 

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া এডুকেশনাল টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাস্তুরা জাহান মারিয়া বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’। কিন্তু নতুন নামকরণে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত না থাকায় আমরা গভীরভাবে হতাশ। যৌক্তিক ও পরিপূর্ণ নামের অভাবে আমাদের একটি পরিচিতি সংকটে পড়তে হচ্ছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে মনোযোগী হতে পারছেন না।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে দেশের নাম থাকা শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত দেশের নামযুক্ত একটি যৌক্তিক নাম দ্রুত বাস্তবায়ন করা হোক, যাতে করে আমাদের এই পরিচিতি সংকটের অবসান ঘটে।

আরেক শিক্ষার্থী মো. ইউনুস বলেন, আমরা আজ এখানে এসেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি যুক্ত করার যৌক্তিক ও ন্যায্য দাবি নিয়ে। এ দাবির পেছনে রয়েছে আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রশ্ন এবং দেশের সঙ্গে গভীর আবেগ ও সংযুক্তির অনুভব।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোতে স্মারকলিপিও প্রদান করেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা কোনো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

প্রসঙ্গত, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরে অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’ নামটি পরিবর্তন করে ‘গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’ নামে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সরকার একটি গেজেট প্রকাশ করে। এতে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘গাজীপুর’ যুক্ত করার প্রতিবাদে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।

গেজেট প্রকাশের পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের একাধিক ব্যাচ ৬ মাস থেকে দেড় বছর পর্যন্ত সেশনজটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।